বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য নিউ জিল্যান্ড যেন এক বিভীষিকার নাম। শান্তির দেশটিতে সফরে গিয়ে বাংলাদেশ দেড় যুগে তিন ফরম্যাটে ৩২টি ম্যাচ খেলেছিল। তার একটিতেও ছিল না জয়। টেস্ট খেলেছিল ৯টি। জয় তো দূরের কথা, ৫টিতে হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে।
এবার সাকিব-তামিম-মাহমুদউল্লাহকে ছাড়া সেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে সিরিজে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। রোববার ভোরে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ক্রাইস্টচার্চে নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই টেস্টটিতে কোনোরকমে ড্র করতে পারলেই বাংলাদেশ গড়বে আরেক অনন্য কীর্তি। প্রথমবার নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয়ের কীর্তি। অন্যদিকে এই ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরাতে মরিয়া স্বাগতিকরা।
অবশ্য কাজটা সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। কারণ, ম্যাচটি যে হবে পেসারদের স্বর্গরাজ্য ক্রাইস্টচার্চে। তাই অনেকেই শঙ্কা করছেন ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে ভোগাবে নিউ জিল্যান্ডের পেসাররা। যেটার পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন কিউই অধিনায়ক টম লাথাম, ‘এখানকার উইকেট মাউন্ট মঙ্গানুই থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা শেষ কয়েক বছর ধরে এখানে দারুণ ক্রিকেট খেলে আসছি। আর আমরা আমাদের ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে চাই এখানে। সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছে। আমরা প্রস্তুত দারুণ একটা পারফরম্যান্স দিতে।’
তবে বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ক্রাইস্টচার্চে তার পেসারদের ওপর আস্থা রাখছেন। তার মধ্যে এবাদত-তাসকিন-শরীফুলরাও পিছিয়ে নেই, ‘এই উইকেটে পেসাররা অনেক বেশি সুবিধা পায়। এটা আমাদেরও সুবিধা দিবে। আমাদের কয়েকজন মানসম্পন্ন পেসার আছে। খুব কম সময়ই বাংলাদেশ ঘাসের উইকেটে সুবিধা নেওয়ার কথা ভাবতে পারে। আমাদের তিন পেসার অনেক উঁচু মানের, তারা আত্মবিশ্বাসী। শুরুতে বোলিং করতে পারলে আশা করি তাদের ঘায়েল করতে পারবো।’
ক্রাইস্টচার্চে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী তাসকিন আহমেদও, ‘গতকাল বৃষ্টির জন্য আমাদের ট্রেনিং সেশনটি হয়নি। তবে আজকে ট্রেনিংয়ে আমরা যতটুকু পেরেছি এডজাস্ট করেছি। এখন আমরা আশাবাদী। ওভারঅল সবার মানসিকতা ও প্রিপারেশন ভালো অবস্থানে রয়েছে। আমরা আমাদের সেরাটাই খেলবো, জয়ের জন্যই খেলবো।’
অবশ্য ক্রাইস্টচার্চে টস অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে আগের ১০ ম্যাচে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ইনিংসে গড়ে ২৬০-২৭০ রান হয়। তাছাড়া নতুন বল ব্যবহারের জন্য প্রথম দিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়নরা শেষ ম্যাচ জিততে চাইবে। ঘরের মাঠে পয়েন্ট পেতে চাইবে। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় টেস্টে তারা একটি অথবা দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামতে পারে।
অন্যদিকে ইনজুরিতে পড়ায় এই ম্যাচে খেলতে পারবেন না প্রথম টেস্টে দারুণ খেলা মাহমুদুল হাসান জয়। তার পরিবর্তে দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে পারেন ফজলে মাহমুদ অথবা মোহাম্মদ নাঈম।
বাংলাদেশের বোলারদের পাশাপাশি ব্যাটসম্যানরা যদি নিজেদের মেলে ধরতে পারেন, ধৈর্য্য ধরে খেলতে পারেন তাহলে সিরিজ জয়ের আরেকটি ইতিহাস রচিত হতেই পারে।