ওমিক্রন বিদায় নিলেও নতুন করে আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট আসবে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। তবে সেটি তেমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিঙ্গাপুর প্রবাসী এই অণুজীব বিজ্ঞানী ভার্চুয়ালি এসব তথ্য জানান।
ড. বিজন বলেন, নিয়মিতভাবে করোনার একের পর এক নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হবে। ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে গেলেও সবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিন্তু সমান নয়। যাদের ইমিউনিটি কম, তাদের মধ্যে ভাইরাসের মিউটেশনটা একটু খারাপের দিকে যায়। দেহে কমে আসা অ্যান্টিবডির বিপরীতে ভাইরাসটি তখন টিকে যায়। সেক্ষেত্রে ভাইরাস অনেক সময় রিসেপ্টর পরিবর্তন করে। এক্ষেত্রে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট একটি ভালো উদাহরণ।
তিনি বলেন, ওমিক্রন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের অ্যান্টিবডিকে শতভাগ নিষ্ক্রিয় করতে পারেনি, কারণ যে সমস্ত অ্যান্টিবডি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করেছিল, ওই অ্যান্টিবডির বিপরীতেই ওমিক্রনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। সুতরাং ওমিক্রনের পরও আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট আমরা দেখতে পাবো।
তিনি বলেন, ওমিক্রনের মধ্যেও আমরা দেখেছি তিনটি উপ-ধরন তৈরি হয়েছে। সেগুলো হলো- বিএ.১, বিএ.২ এবং বিএ.৩। এই তিনটি ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে প্রথম এবং দ্বিতীয়টি একটু কাছাকাছি ছিল। বিএ.১ এর চেয়ে বিএ.২ বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। যদিও এর কারণ নিয়ে সঠিক কোনো গবেষণা নেই।
তিনি আরও বলেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের একটি মূল এলাকা হলো শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগ। আর এই উপরিভাগে এসি-২ রিসেপ্টরের পরিমাণ খুবই কম। তারপরও কিন্তু ওমিক্রন গ্রো করছে। তার মানে, সে নিজেই অন্য আরেকটি রিসেপ্টর তৈরি করেছে যেটি সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি। এখন যদি নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসে আরেকটি নতুন রিসেপ্টর বাইন্ডিং তৈরি করে, তাহলে সেটি আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।
তবে নতুন ভ্যারিয়েন্ট এলেও সেটি ভয়ের কারণ হবে না জানিয়ে ড. বিজন কুমার বলেন, মনে রাখবেন ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টিকারী কোষ একটি নয় চারটি একসঙ্গে কাজ করে। সুতরাং নতুন যে ভ্যারিয়েন্টই আসুক না কেনো, সেটি কিন্তু ব্যাপক বিস্তার লাভ করতে পারবে না। কারণ আমাদের দেহে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি আছে। খোঁজ নিলে দেখতে পারবেন, ওমিক্রন তাদেরই বেশি হচ্ছে যারা টিকা নেয়নি। তাই সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টিকা নিতে হবে বলেও জানান এই বিজ্ঞানী।