গতকাল সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতেই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। বিপিএল ফাইনাল খেলে পরদিনই উড়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে দুই দিন ব্যস্ত সময় কাটিয়ে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম চলে আসেন বাংলাদেশের বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সাত সকালে দলের সঙ্গে অনুশীলনেও হাজির সাকিব। ম্যাচের আগে তাকে খুব কঠোর অনুশীলনে দেখা যায় না। নেটে হালকা নকিং, গা গরমের জন্য ফুটবল আর বল হাতে কয়েকবার হাত ঘুরিয়ে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। তবে আজ ব্যাটিংয়ে লম্বা সময় নেটে কাটিয়েছেন। শুরুতে স্পিনারদের খেলার পর পেস বোলারদের মোকাবিলা করেন। এরপর যা করলেন তা অপ্রত্যাশিত ছিল সবার কাছেই!
ব্যাটিং অনুশীলনের পর দীর্ঘ সময় বিশ্রাম নেন সাকিব। এ সময় বড় ছাতার নিচে বসে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে চলে আসেন নেটের বোলিং প্রান্তে। মিরাজ, নাসুমদের বোলিং দেখছিলেন দূর থেকে। মুশফিকুর রহিমকে থ্রো ডাউন শেষে তার সঙ্গে যোগ দেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। দুজনের দীর্ঘক্ষণের আলাপচারিতায় বোঝা যাচ্ছিল না ঠিক কী নিয়ে কথা হচ্ছিল। তবে দুজনকেই বেশ হাসিখুশি লাগছিল।
এরপর নেটে আফিফ হোসেন ধ্রুব যেতেই সাকিব তুলে নেন বল। পেসারদের মতো করে সিম গ্রিপ করলেন। এরপর দৌড়ে আফিফকে পেস বোলিং করলেন। উপস্থিত সবারই চোখ ছানাবড়া। শুধু একবার নয়, আফিফকে প্রায় দুই ওভারের মতো পেস বোলিং করলেন সাকিব। বোলিং অ্যাকশনে কাউকে অনুকরণ করেননি। দৌড়ে এসে নিজের বোলিং অ্যাকশনেই বল ছুড়েছেন। তবে প্রতিটি বল করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছিলেন সিম বরাবর গ্রিপ করতে পারছিলেন কি না।
পেস বোলিংয়ে এক সময়ে আফিফকে আউটও করেছিলেন সাকিব। তার অফস্টাম্পের বাইরের বল চালাতে গিয়ে ক্যাচ দেন আফিফ। সাকিব আউট বলে দুই হাত মেলে উদযাপনও করছিলেন। কিন্তু তাকে থামিয়ে আফিফের বক্তব্য, ‘কিসের আউট। বল তো স্লিপ দিয়ে বেরিয়ে যাবে।’ সাকিবের পাল্টা উত্তর, ‘আমি তো স্লিপ নিয়ে বোলিং করছি। একটা না, তিনটা স্লিপ রেখেছি।’ অদৃশ্য সেই স্লিপ ফিল্ডারের হাতেই ধরা আফিফ! পেস বোলিংয়ে সাকিবের অভিষেক উইকেট! এরপর আর আফিফ কিছু বলার সুযোগই পেলেন না।
দলীয় অনুশীলনের শেষ প্রান্তে মাহমুদউল্লাহর অনুরোধে নেটে হাত ঘোরান সাকিব। সেবার অবশ্য স্পিনই করেছেন। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গেও চলে তার খুনসুটি। মাহমুদউল্লাহকে একবার এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে আউটের আবেদন। সে কী চিৎকার সাকিবের! মনে হচ্ছিল, মাহমুদউল্লাহর উইকেটটি পেলেই অনুশীলন পর্ব পুরোপুরি সার্থক।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে ওয়ানডে ফরম্যাটে দীর্ঘ বিরতি পেয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে পুরোপুরি স্কোয়াড নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি তামিমের দল। মুশফিকুর রহিমকে পায়নি বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ছিলেন না তামিম, সাকিব, মুশফিক। এবার পূর্ণশক্তির দল নিয়ে মাঠে নামতে পারায় খুশি তামিম, ‘ইনজুরি বলুন বা ছুটির কারণে আমরা পুরো দল খেলতে পারিনি। এটা সৌভাগ্য যে এই সিরিজে পুরো দল পাব। অধিনায়ক হিসেবে এরচেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। সবাই ভালো অবস্থায় আছে, মানসিক বা পারফরম্যান্সের দিক থেকে। আমরা সবাই জানি এই সিরিজ আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’