প্রতি বছর খাদ্যবাহিত রোগে ১ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়, এর মধ্যে ৫০ হাজারই শিশু। এছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে প্রতি বছর দূষিত খাবার গ্রহণ করে ১৫ কোটির বেশি মানুষ অসুস্থ হয়। এর মধ্যে শুধু শিশুই রয়েছে ৬ কোটি।
বুধবার (২ মার্চ) দুপুরে রংপুরে আরডিআরএস বাংলাদেশ ভবনের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় রংপুর জেলার শতাধিক সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, ভোক্তারা অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে তৃণমূল পর্যায়ে খাদ্যের পরীক্ষার ব্যবস্থা পৌঁছে দেয়া হবে। সারা দেশে খাদ্যের ঝুঁকিও নিরুপণ করা হচ্ছে। জনগণকে ফাঁকি দিয়ে দ্রুত বড়লোক হওয়া ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কেকে ক্রিমের ব্যবহার না করে অতি মাত্রায় ডালডা ব্যবহার হচ্ছে। মানুষের হৃদযন্ত্রের জন্য উচ্চমাত্রার ট্রান্সফেটিক এডিস ক্ষতিকর। আর এই ট্রান্সফেটিক এডিস ডালডায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক মান ২ ভাগের বেশি ডালডা কোনো খাদ্যদ্রব্যে থাকতে পারে না। কিন্তু দেশে খাদ্য ১০ শতাংশের বেশি ডালডা ব্যবহার করা হচ্ছে। সারা দেশে খাদ্যে ব্যবহৃত রং পরীক্ষা করা হচ্ছে।
আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, প্রতি জেলায় একজন নমুনা সংগ্রাহক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফুড গ্রেড রং ছাড়া কেমিক্যাল রং ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশের ৮টি বিভাগীয় জেলায় ৮টি মোবাইল ল্যাবরেটরি থাকবে। যা প্রয়োজনে বিভাগের অন্যান্য জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. শামীম আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফিরুজুল কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সৌরভ চন্দ্র বর্মন।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, খাদ্যে ভেজাল দিন দিন বেড়ে গেছে। ডালডা ও ডিমের সাদা অংশ দিয়ে কেকের উপরে ক্রিম হিসেবে চালানো হচ্ছে। মিষ্টিতে স্যাকারিন মেশানো, বিভিন্ন খাবারে অনুমোদিত রং মেশানো হচ্ছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।