ক্যাম্পাস

ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছেন জাবির শিক্ষার্থীরা 

গ্রীষ্মকালীন অবকাশ, পবিত্র মাহে রমজান, শব-ই-কদর ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২১ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি ও ছুটি কাটাতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানেই উচ্ছ্বাস। আর বাড়ি ফেরার উচ্ছ্বাস ঈদের আনন্দকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। 

শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে বাস কাউন্টারগুলোতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বন্ধুদের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে নারীর টানে গন্তব্যে পৌঁছানোর উচ্ছ্বাস ছিল তাদের চোখেমুখে। 

ভোর হতেই শুরু হয় তাদের বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি। হলের বন্ধ রুমের আবদ্ধ রঙিন কাপড়ের জায়গা হয়েছে ব্যাগের এক কোণে । প্রিয় হলের মায়া ত্যাগ করে ব্যাগ হাতে কল্পনার সেই শুভ যাত্রার সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে অপেক্ষমান একদল শিক্ষার্থী বলেন, অনেক দিন পর বাড়ি ফিরবো। আনন্দটা তাই একটু বেশিই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। বাসে চড়ে গাবতলী কাউন্টারে যাবো, তারপর প্রিয় নিবাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। 

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের। সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়ার উদ্দেশ্যে পরিবার পরিজন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে আসেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। হৃদয়ে লালন করা হাজারো স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই তাদের এই বিরামহীন ছুটেচলা। ছুটতে ছুটতে একসময় পেয়ে বসে ক্লান্তি। ক্লান্ত-শ্রান্ত মন চায় একটু বিশ্রাম নিতে। আর সেই সুযোগটা করে দেয় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর।

পরিবার পরিজনের সঙ্গে দেখা হয় না সবসময়। একমাত্র ঈদের সময়ই তারা একত্রিত হওয়ার সুযোগ পান।  একারণে রাস্তার সীমাহীন দুর্ভোগ, যানজট, টিকেটের ভোগান্তি কোনো কিছুই তাদের বাড়ি ফেরার আনন্দকে দমিয়ে রাখতে পারে না।  

বাড়ি ফেরার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী তাজহারুল ইসলাম সজীব বলেন, গত বছর ক্যাম্পাসে এসেছিলাম।  ক্লাস-পরীক্ষাসহ প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম নিয়মিত চলায় আর বাড়ি যাওয়া হয়নি৷ ছুটির কয়েকদিন আগে থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ছিলাম৷ অবশেষে স্বস্তির যাত্রা। আর আমার এলাকা সুনামগঞ্জ হাওর অঞ্চলে। সম্প্রতি অতি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে কৃষকের স্বপ্ন সোনালি ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তখন থেকে আরও বেশি করে ভাবছিলাম, আমার বাড়ি যাওয়া প্রয়োজন৷আমিও তাদের সঙ্গে ‌‘উড়া কোদাল’ নিয়ে বাঁধ রক্ষার সংগ্রামে থাকতে চাই৷