পোল্ট্রি মুরগির খাবার বিশেষ করে সয়াবিন মিল, ভুট্টার গুঁড়া, গমের গুঁড়া, চালের কুঁড়াসহ সব ধরনের ওষুধের দাম বেড়েছে। ফলে এই খাতের উদ্যোক্তারা প্রতিনিয়ত লোকসানের দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
পোলট্রি খামারের সাথে সম্পৃক্তরা জানান, অগ্রিম আয়কর, আমদানি শুল্ক ও করপোরেট ট্যাক্স প্রত্যাহার না হওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে দেশের পোল্ট্রি শিল্প। তারা বলছেন, অচিরেই এর সুরাহা না হলে বিপদে পড়বে এই শিল্প। ফলে আমিষের ঘাটতিতে পড়বে জনসাধারণ। এই সংকট কাটাতে কর অব্যাহতির সুযোগ চেয়েছেন পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা।
জেলার শ্রীপুর উপজেলার প্রান্তিক পোলট্রি খামারি জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, মুরগির ওষুধ ও খাবারের দাম বেড়েছে। মুরগির প্রধান খাবার সয়াবিন মিলের দাম বেড়েছে অনেক। সাধারণত দেশের ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেই এগুলো বাজারে আসে। ভোজ্যলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সয়াবিনের বাজার এখন বেশ চড়া। পাশাপাশি কাঁচামালের ওপর অগ্রিম আয়কর, আমদানি শুল্ক ও করপোরেট ট্যাক্স প্রত্যাহার না হওয়ায় এসব খাদ্যের দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়বে এই পোল্ট্রি শিল্প।
তিনি জানান, তার খামার থেকে লাল ডিম প্রতিটি নয় টাকা ১০ পয়সা বিক্রি করা হয়। আর সাদা ডিম বিক্রি করা হয় ৮ টাকা ৩৫ পয়সা। খামার থেকে এ ডিম চলে যায় আড়তে। আর আড়ৎ থেকে ডিম চলে যায় বড় বড় পাইকারি মোকামে। মোকাম থেকে যায় পাইকারি দোকানে সেখান থেকে চলে যায় খুচরা পর্যায়ের দোকানে আর দোকান থেকে যায় গ্রাহকের হাতে। এ চারটি ধাপ পার হয়ে ডিম যখন সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পৌঁছায় তখন ডিম প্রতি এক থেকে দেড় টাকা করে বেড়ে যায়। সাধারণ ক্রেতারা খুচরা দোকানে ৯ টাকা ১০ পয়সার প্রতিটি ডিম কিনে থাকেন ১০ থেকে ১১ টাকায়।
খামারিরা জানান, পোল্ট্রি ফিড তৈরির জন্য মোট ৯ ধরনের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মধ্যে প্রোটিন কনসেনট্রেট, ভুট্টা, লাইম স্টোন, হুইট পলিশ, সয়াবিন মিল, রাইস ব্রান, ফিসমিল, ব্রয়লার ফিড ও লেয়ার ফিড অন্যতম।
খামারি আবুল খায়ের বলেন, বাজারে মুরগির বাচ্চার দাম কম থাকলেও ওষুধ থেকে শুরু করে সব ধরনের খাদ্যে অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির কারণে এ শিল্পে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মতিন জানান, গাজীপুরের পোলট্রি শিল্প প্রতিনিয়ত লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এক সময়ে শ্রীপুরে চার হাজারের মতো খামার ছিল। বর্তমানে আছে প্রায় দেড় হাজার খামার। শ্রীপুরে এক সময়ে ৩০ লাখ ডিম উৎপাদন হতো। এখন তা নেমে আসেছে ১০ লাখে। ডিমের দাম খামারি পর্যায়ে ১২ টাকা পিস হলে এ শিল্প টিকে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এ শিল্পকে বাঁচাতে হলে পোলট্রি খাদ্যে ভর্তুকি দিতে হবে। এসব পণ্যে ট্যাক্স ফ্রি করতে হবে। এতে পোলট্টি শিল্পের কাচামালের আমদানি বাড়বে।