খেলার প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টান-ভালোবাসা কম বেশি সবারই জানা। সুযোগ পেলেই ছুটে যান স্টেডিয়ামে। আর মাঠে না যেতে পারলে রাখেন খেলার খোঁজখবর।
বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। সময়ের ব্যবধানে দিনে-রাতে পার্থক্য থাকায় ক্যারিবিয়ান দ্বীপের খেলা দেখা কঠিন। নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। তারপরও শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও খেলা দেখা বাদ দেননি প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি রাত জেগে দেখেছেন শেখ হাসিনা। ম্যাচ শুরু হয় বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আর শেষ হতে হতে প্রায় ৩টা বাজে। রাত জেগে প্রধানমন্ত্রী শুধু খেলাই দেখেননি, উৎকণ্ঠায় বারবার ফোন দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে।
রোববার (১৭ জুলাই) বিসিবির পঞ্চম বোর্ডসভা শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান নাজমুল হাসান নিজেই, ‘জয়সূচক শট যখন খেললো, রানটা যখন নিলো, যতটুকু মনে পড়ে তখন রাত পৌনে তিনটা বাজে। সাথে সাথে ফোন করলেন (প্রধানমন্ত্রী)। বললেন, ‘এই ভালো খেলছে তো…।’ আমি বললাম, ‘আপনি এত রান পর্যন্ত জেগে আছেন?’ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বললেন, ‘আমি চিন্তায় ঘুমাতে পারিনি।”
লিটন দাসের সঙ্গে ৫০ রানের জুটির পর তামিম ইকবাল আউট হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী চিন্তায় পড়ে যান। তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ফোন দিলে জয়ের ব্যাপারে ভরসা দেন বিসিবি সভাপতি।
নাজমুল হাসান বলেন, ‘কোনো আলাপ আলোচনা ওয়ানডে নিয়ে হয়নি। ওয়ানডে নিয়ে শুধু একটা কথাই হয়েছে, সেটাও আনুষ্ঠানিকভাবে নয়। তামিম আউট হয়ে যাওয়ার পরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন করেন। তিনি খুব টেন্সড। তামিম আউট হয়ে গেলো। তো যাই হোক, আমি বললাম, ‘অসুবিধা নেই, জিতবো ইনশাআল্লাহ। আপনি কোনো চিন্তা করেন না।”
তামিম আউট হলেও বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়ে হাসিমুখে। বাংলাদেশ জয় পায় ৪ উইকেটে। এই জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তৃতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ।
শুধু গতকাল নয়, এর আগেও খেলার সময় বিভিন্নবার বিসিবি সভাপতিকে ফোন করে খোঁজ খবর জানতে চাইতেন প্রধানমন্ত্রী। জয়ের পর ক্রিকেটারদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার অতীত রেকর্ডও রয়েছে। তবে গভীর রাতেও না ঘুমিয়ে প্রধানমন্ত্রী খেলা দেখায় বিস্মিত হয়েছেন নাজমুল হাসান।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এটাই আমি বোর্ড মেম্বারদের বলছিলাম, অবিশ্বাস্য। উনি এত ব্যস্ত থাকেন। তারপরও রাত জেগে খেলাগুলো দেখছেন…।’
আসলেই তো! ক্রীড়া অনুরাগী প্রধানমন্ত্রী বলে কথা।