টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধীর গতিতে ব্যাটিং করে প্রবল সমালোচিত হয়ে আসছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের শেষ দিকে দ্রুত গতিতে রান তোলা তার কাজ। অথচ দলের প্রয়োজনমাফিক কাজটাই করতে পারছিলেন না তিনি।
ব্যাটে রান না থাকায় অধিনায়কত্ব হারানো থেকে শুরু করে দল থেকে বাদও পড়তে হয়েছে তাকে। ওয়ানডে ক্রিকেট থেকেও মাহমুদউল্লাহ সেই খোলস থেকে বের হতে পারেননি। তবে রোববার হারারেতে ৮৪ বলে ৮০ রানের যে ইনিংস খেলেছেন তাতে তাকে ২২ গজে দুই রূপে পাওয়া গেছে।
শুরুর ব্যাটিং ও শেষের ব্যাটিংয়ে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। শুরুর ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহ নিশ্চিতভাবে খলনায়ক। শেষের ব্যাটিংয়ে স্রেফ নায়ক। ৮৪ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংসে ছিল ৩৭ ডট বল। অথচ এর অর্ধেক রান নিতে পারলে মাহমুদউল্লাহ আজ সেঞ্চুরির দেখাও পেতে পারতেন।
২৪তম ওভারে মুশফিকুর রহিম আউট হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে আসেন। ওই মুহূর্তে দলের হাল ধরার দরকার ছিল। ক্রিজে থাকা শান্তর সঙ্গে জুটি বেঁধে রান বড় করার দরকার ছিল। মাহমুদউল্লাহ ও শান্ত চতুর্থ উইকেটে সেই কাজটাই করেছেন। কিন্তু উইকেটে থিতু হতে গিয়ে দুজনই ক্রমাগত ডট বল খেলেন। তাতে বেড়েছে চাপ। সেই চাপ থেকে বের হয়ে আসতে অবশ্য কেনো ঝুঁকি নেননি। ইনটেন্ট দেখাননি।
নিজের খেলা পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ প্রথম রান নেন। আগের চার বলই ছিল ডট। ১২তম বলে পেয়ে যান প্রথম বাউন্ডারি। এর জন্য অপেক্ষা করতে হয় ২৫ বল। এর মাঝে নিয়মিত রান তোলা হয়নি তার। ডট বলের বন্যায় নিজের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মাঝে একটা সময় টানা ৮ বল খেলেছেন। কখনো ৫টি, কখনো ৩টি করে ডট বল খেলেছেন।
পেসারদের বিপক্ষে রান তোলায় ভুগছিলেন তিনি। বৃত্তের বাইরে বল পাঠাতেই পারছিলেন না। স্পিনারদের বিপক্ষে তাকে রান নিতে তেমন আগ্রহীও দেখা যায়নি। পায়ের ব্যবহার করেননি। নিয়মিত যেসব শট খেলে রান তোলার তাড়া দেখান সেখানেও ছিলেন নীবর।
মাহমুদউল্লাহর ৪০ ওভার পর্যন্ত রান করেছেন ৫০ বলে ২৭! ফিফটি ছুঁয়েছেন ইনিংসের ৪৭তম ওভারে, ব্যক্তিগত ৬৯ বলে। মূলত ৪৬তম ওভারের পর থেকে মাহমুদউল্লাহ হাত খোলা শুরু করেন। তিন ছক্কার প্রথমটি এসেছে ওই ওভারেই। পেসার ইভান্সকে লং অন দিয়ে উড়ান বিশাল ছক্কা। এরপর ৪৯তম ওভারে জংগুয়েকে এবং শেষ ওভারে নউয়ুচিকে ছক্কা মেরে নিজের রান ও দলের পুঁজি বড় করেন মাহমুদউল্লাহ।
ফিফটির পর ১৫ বলে ৩০ রান তুলে মাহমুদউল্লাহ ফিনিশারের ভূমিকায় লেটার মার্কস পেয়েছেন। কিন্তু শুরুর ঢিলেমী ব্যাটিংয়ে পাশ মার্কসটাও তোলা হয়নি। ২২ গজে দুই মেরুর দুই মাহমুদউল্লাহকেই পাওয়া গেল। তবে শেষটা ভালো হওয়ায় সব ভালোর তকমাই পাচ্ছেন তিনি।