পিরোজপুর থেকে মায়ের চিকিৎসা করতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন মিলন শেখ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাকে হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি। এ কারণে ওইদিন মায়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে পারেননি। শুক্রবার সপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় সেদিনও অসুস্থ মায়ের শারীরিক পরীক্ষা করাতে ব্যার্থ হন মিলন।
গত শুক্রবার সকালে জনৈক দালালের মাধ্যমে সোনাডাঙ্গা ডক্টরস ল্যাবে মায়ের পরীক্ষা করাতে যান মিলন। সেখান থেকে বলা হয় সন্ধ্যায় টেষ্টের রিপোর্ট দেওয়া হবে। যথাসময়ে হাজির হয়ে রিপোর্ট হাতে পাননি। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি র্যাবের কাছে জানান।
অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে র্যাব-৬ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায়। এসময় আটক করা হয় দলাল চক্রের ৩২ সদস্যকে।
আটককৃতদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। ১৪ জনকে অর্থদন্ড দেওয়া হয়।
খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আগেও এই হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। সে সময় দালালদের দৌরাত্ম কমে গিয়েছিল। কিন্তু অভিযান না থাকায় তাদের উপদ্রব আবারো বেড়ে গেছে। খুলনা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষদের তারা প্রতিনিয়ত ঠকায়। এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন এসব দালালরা।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘দালালদের দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টার্গেট করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎতপরতা চালানো হয়। আজ (সোমবার) দালালদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অভিযানে মোট ৩৪ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে সর্বোচ্চ তিন থেকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়য়েছে। ১৪ জনকে তিন হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
র্যাব-৬-এর উপঅধিনায়ক আব্দুর রাকিবের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল হাসান।
লে. কর্ণেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, ‘হাসপাতাল ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বড় পরিসরে অভিযান চালানো হয়েছে। ৩২ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।’