কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে কয়েকজন ছাত্রী। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নাহারুল ইসলাম নামে এক সহকারী শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই বিদ্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন দিন আগে আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসানের কাছে শিক্ষক নাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ দেন। নাহারুল তার বাড়িতে প্রাইভেট পড়ানোর সময় ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়া ও শ্লীলতাহানি করতেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
জানা গেছে, সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর ক্লাস চলাকালীন সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের বারান্দায় ডেকে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন শিক্ষক নাহারুল ইসলাম। ঘটনার বিষয়ে ওই ছাত্রী পরদিন তার অভিভাবককে বিষয়টি বললে অভিভাবকরা এসে প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে বিষয়টি অবহিত করেন।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হোগলবাড়ীয়া ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী শিক্ষকদের নিয়ে বিদ্যালয়ে বসলে মুহূর্তের মধ্যেই যৌন-নিপীড়নের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নাহারুলকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একটি মহল জানান, অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নাহারুল ইসলাম অতীতেও একই ধরনের কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ায় তাকে প্রায় দশ মাস সাময়িক বরখাস্ত করে রেখেছিল স্কুল পরিচালনা পরিষদ।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হোগলবাড়ীয়া ইউপির চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। সেখানে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। পুলিশ অভিযুক্ত নাহারুলকে আটক করে নিয়ে গেছে। আমরাও যৌন নিপীড়নের এই ঘটনায় নাহারুলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমলে নিয়ে পরিচালনা পরিষদের মিটিং ডেকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নাহারুল ইসলাম নামে এক শিক্ষককে আমরা আটক করেছি। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।