অর্থনীতি

এসিইএস অ্যাওয়ার্ড পেলো বিএটি বাংলাদেশ

একমাত্র বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘টপ সাস্টেইন্যাবিলিটি অ্যাডভোকেটস ইন এশিয়া’ ক্যাটাগরিতে মর্যাদাপূর্ণ এশিয়া কর্পোরেট এক্সিলেন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি (এসিইএস) অ্যাওয়ার্ড ২০২২-এ ভূষিত হয়েছে বিএটি বাংলাদেশ। পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসন (ইএসজি) সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় প্রতিষ্ঠানটিকে এ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।

২০১৪ সাল থেকে চালু হওয়ার পর এসিইএস অ্যাওয়ার্ডস এশিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারগুলোর একটি। অনন্য সব উদ্ভাবন, বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা ও বিভিন্ন সমস্যা থেকে উত্তরণ সংক্রান্ত বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকাকে বিবেচনায় নিয়ে এসিইস সেরা ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এর নবম সংস্করণে পুরস্কৃত করার জন্য নির্বাচিত করেছে। পুরস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নয় মাসব্যাপী বিস্তৃত পরিসরে একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়ন এবং বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে; যেখানে তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য জমা ও চূড়ান্ত সাক্ষাৎকার প্রদান করতে হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে মোর্স (এমওআরএস) গ্রুপের প্রধান নির্বাহী শ্যাংগারি বি. বলেন, ‘একটি টেকসই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ দেখিয়েছে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের সঠিক বাস্তবায়ন কিভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে কোভিড-পরবর্তী ভবিষ্যৎ তৈরিতে সাহায্য করেছে; যেখানে প্রতিষ্ঠানটি তাদের সকল কাজে টেকসই উন্নয়নের দিকেই নজর দিয়েছে।’ 

বিএটি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম বলেন, ‘টানা দুই বছর ধরে এই বৈশ্বিক পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায় ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে একটি সম্ভাবনাময় আগামী নির্মাণে আমাদের যে প্রচেষ্টা, এ স্বীকৃতি তারই বহিঃপ্রকাশ।’

বিএটি বাংলাদেশ ১১২ বছর ধরে এ অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং প্রতিষ্ঠানটির সকল প্রচেষ্টায় টেকসই উন্নয়নে অগ্রাধিকার প্রদান করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির ইএসজি লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধকরণ, জিরো-ওয়েস্ট-টু-ল্যান্ডফিল, পানি পুনর্ব্যবহার করা এবং কার্বন নিরপেক্ষতার দিকে এগিয়ে যাওয়া। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির উপর শতভাগ নির্ভরতা নিশ্চিত করে নিজস্ব কার্যক্রমে কার্বন-নিরপেক্ষতা অর্জন করা এবং ২০৫০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ ভ্যালু চেন-এ কার্বন নিঃসরণ শূন্যতে নামিয়ে আনা।

বিএটি বাংলাদেশ পানি সঙ্কটের তীব্রতার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে এবং প্রতিষ্ঠানটির সকল স্তরে অনুকরণীয় পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে নিশ্চিত করাকে দায়িত্ব বলে মনে করে। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালে দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর ঢাকা কারখানা এবং কুষ্টিয়ায় গ্রীন লিফ থ্রেশিং প্ল্যান্টের জন্য অ্যালায়েন্স ফর ওয়াটার স্টুয়ার্ডশিপ (এডব্লিউএস) কোর সার্টিফিকেশন অর্জন করে। 

প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি কৃষকদের মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, পানি সংরক্ষণ ও দূষণ কমানোর জন্য পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখযোগ্য ইএসজি উদ্যোগ, বেসরকারি খাত পরিচালিত সর্ববৃহৎ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি দেশব্যাপী বিনামূল্যে প্রায় ১২ কোটি চারা বিতরণ করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ এলাকার ২ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি সুবিধাভোগীদের প্রতিদিন আর্সেনিক ও অন্যান্য দূষণমুক্ত পানি সরবরাহের প্রকল্প এবং একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প, যা চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।

বিএটি বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, তাদের পরিচালিত ইএসজি উদ্যোগগুলো দেশের মানুষের জন্য নিরাপদ, উৎপাদনশীল ও উন্নত পরিবেশ তৈরি করে একটি সম্ভাবনাময় আগামী বিনির্মানে ভূমিকা রাখবে।