শেষ হচ্ছে আরেকটি বছর। কাল উঠবে নতুন বছরের সূর্য। গত একটি বছরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ঘটে গেছে কত ঘটনা। তবে ২০২২ সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি ওঠার কারণে। ফুটবল ভক্তদের কাছে বছরটা ঝলমলে হয়ে থাকতে পারতো। কিন্তু শোকের ঢেউ লেগে শেষ হলো বছর। না ফেরার দেশে চলে গেছেন ফুটবলের রাজা পেলে। ১৮ ডিসেম্বর যেমন মেসির সাফল্যের কারণে মনে থাকবে, তেমনই শোকাবহ দিন হিসেবে বাইশের ক্যালেন্ডারে লাল দাগ থাকবে ডিসেম্বরের ২৯ তারিখে। এছাড়া বাইশে ঘটেছে আরও কত ঘটনা, সেগুলোর মধ্যে থেকে কিছু তুলে ধরা হলো বাইশের সালতামামিতে:
আবারও ফিফা দ্য বেস্ট লেভানদোভস্কি
জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ফিফার বর্ষসেরা অ্যাওয়ার্ড ‘দ্য বেস্ট’ টানা দ্বিতীয় বছর হাতে ওঠান রবার্ট লেভানডোভস্কি। লিওনেল মেসিকে মাত্র চার পয়েন্টের ব্যবধানে হারিয়ে ফুটবলের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার জেতেন। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্সিতে ৪৪ ম্যাচে ৫১ গোল ও আট অ্যাসিস্ট। বুন্দেসলিগায় জার্ড মুলারের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৪০ গোলের রেকর্ডও ভাঙেন তিনি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আট ম্যাচে করেন ৮ গোল।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ফিফা-উয়েফার কঠোর অবস্থান
ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয় বিশ্ব ফুটবল সংস্থা ফিফা ও ইউরোপের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা। সব ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা হয় তাদের। তাতে বিশ্বকাপ বাছাইও খেলতে পারেনি রুশ ফুটবল দল।
আর্লিং হাল্যান্ড, ‘দ্য বিস্ট’
রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো শীর্ষ ইউরোপিয়ান ক্লাবকে হারিয়ে ৫ কোটি ১০ লাখ পাউন্ডে আর্লিং হাল্যান্ডকে কিনে নেয় ম্যানচেস্টার সিটি। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ছেড়ে যোগ দেন বাবা আলফির পুরোনো ক্লাবে। তারপর একে একে রেকর্ড লুটিয়ে পড়ে তার পায়ে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয় জোড়া গোল করে। এরপর করলেন আরেক কাণ্ড, ঘরের মাঠে টানা তিন লিগ ম্যাচে হ্যাটট্রিক! ক্রিস্টাল প্যালেস, নটিংহ্যাম ফরেস্ট ও ম্যানইউর বিপক্ষে তিনটি করে গোল করেন হাল্যান্ড। মাত্র ৮ ম্যাচ খেলে তিনটি হ্যাটট্রিক তার, সবচেয়ে কম সময়ে প্রিমিয়ার লিগে তিনটি হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন মাইকেল ওয়েনকে পেছনে ফেলে। চ্যাম্পিয়নস লিগেও ছিল একই দাপট। সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যানসিটির জার্সিতে ইউরোপিয়ান মঞ্চে প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করেন। তাতে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ২০ চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে ২৫ গোলের কীর্তি গড়েন তিনি। এছাড়া প্রিমিয়ার লিগে গোলের আরেকটি ইতিহাস গড়ে বছর শেষ করলেন হাল্যান্ড। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জানুয়ারির আগেই ২০ লিগ গোলের মালিক হন ২২ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২০ ম্যাচে ২৬ গোল, বছরটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে তার জন্য।
কিলিয়ান এমবাপ্পের ইউটার্ন
নতুন মৌসুমের আগে জোরেশোরে গুঞ্জন ওঠে, কিলিয়ান এমবাপ্পে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিচ্ছেন। ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ায় ফ্রিতে মাদ্রিদ ক্লাবে চলে যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু স্প্যানিশ জায়ান্টদের চোখ কপালে তুলে দিয়ে ইউটার্ন নেন বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড।
সব গুঞ্জন উড়িয়ে পিএসজির সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করেন এমবাপ্পে। রিয়ালের ভক্তরা তাকে প্রতারক আখ্যা দিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। তার এমন আচরণে হতবাক হয়ে রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ বলেন, ‘আমরা যাকে আনতে চেয়েছিলাম, সে এই এমবাপ্পে নয়। সে অন্য কেউ, যার স্বপ্ন বদলে গেছে। সে পাল্টে গেছে, অন্য কিছু তাকে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাকে চাপ দেওয়া হয়েছে এবং সে এখন অন্য ফুটবলার। রিয়াল মাদ্রিদে ক্লাবের উপরে কেউ নয়। সে অসাধারণ খেলোয়াড়, অন্য কারও চেয়ে অনেক বেশি কিছু জিততে পারে সে। কিন্তু এটা দলগত খেলা এবং আমাদের মূল্যবোধ ও নীতি আছে যা আমরা পাল্টাতে পারি না।’
রিয়াল মাদ্রিদের ইউরোপ জয়
ফ্রান্সের জাতীয় স্টেডিয়ামে ইউরোপ জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগা শিরোপা জয়ের এক মাসের মধ্যে ১৪তম চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি ঘরে তোলে লস ব্লাঙ্কোরা। লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপ সেরা রিয়াল। এছাড়া এই বছর স্প্যানিশ সুপার কাপও গেছে তাদের ঘরে।
বেনজেমার দাপট লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগে দারুণ একটি মৌসুম কাটানোয় ব্যালন ডি’অর জেতেন রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা। ১৯৫৬ সালের পর সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে এই পুরস্কার হাতে নেন ৩৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
রিয়ালের হয়ে ৪৬ ম্যাচে করেছিলেন ৪৪ গোল। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সে ভর করে রিয়াল লা লিগার শিরোপা জেতার পাশাপাশি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ১৪তম শিরোপাও শোকেসে তুলেছিল। তাতে অবধারিতভাবেই বর্ষসেরার পুরস্কারটি জিতেন বেনজেমা।
বিতর্কিত রোনালদো, ব্যর্থ রোনালদো
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে প্রথম মৌসুম কোনোমতে কাটানোর পর দ্বিতীয় মৌসুমে গিয়ে যারপরনাই হতাশ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে না পারার আক্ষেপে জেঁকে বসে তাকে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ছেড়ে অন্য কোথাও পাড়ি জমাতে হন্যে হয়ে ওঠেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
হতাশা এতটাই পেয়ে বসেছিল রোনালদোকে, ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গ্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ফাঁটালেন বোমা। ম্যানইউয়ের ড্রেসিংরুম, কোচ এরিক টেন হ্যাগ এবং মালিক গ্লেজার্স পরিবার- কাউকে ছেড়ে দেননি। তাতে যেন ম্যানইউর সঙ্গে চুক্তির মাঝপথে সম্পর্ক ছিন্নের পথ তৈরি হয়। বিশ্বকাপ চলাকালে তাদের সম্পর্কের ছাড়াছাড়ি হয়।
কাতারে বিশ্বকাপ শুরু হয় রেকর্ড গড়ে। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পাঁচটি বিশ্বকাপে গোলের কীর্তি গড়েন তিনি। তবে গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ফের্নান্দো সান্তোস তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যার খেসারত দিতে হয়েছে নকআউটের দুই ম্যাচে বেঞ্চে থেকে। মরক্কোর কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে তার অশ্রুসিক্ত মুহূর্ত কাঁদিয়েছে অনেককে। বিতর্ক আর ব্যর্থতায় শেষ হয়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতার বছর।
ফাইনালিসিমা ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ও দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়নকে নিয়ে ২৯ বছর পর হলো ফাইনালিসিমা। কোপা আমেরিকা জয়ী আর্জেন্টিনা আরেকবার হাতে নেয় আন্তর্জাতিক কোনও ট্রফি। ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আলবিসেলেস্তেরা। টানা দুই বছরে দুটি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেয় লিওনেল মেসির দল।
বার্সেলোনার ভরাডুবি
গত বছর চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছিল বার্সেলোনা। এবারও সেই ব্যর্থতা থেকে বের হতে পারেনি তারা। জাভি হার্নান্দেজের দল ৬ ম্যাচে মাত্র দুটি জয় পেয়ে বিদায় নিয়েছে গ্রুপ পর্ব থেকে। তাতে টানা দ্বিতীয় মৌসুমে ইউরোপা লিগে নেমে গেছে কাতালান জায়ান্টরা। অবশ্য লা লিগায় শীর্ষস্থান দখল করে আছে তারা।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শ্রেষ্ঠত্ব
টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে অনেক আশায় বুক বেঁধে বিশ্বকাপে অংশ নেয় আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসি তার শেষ বিশ্বকাপে চেয়েছিলেন একমাত্র আক্ষেপ ঘুচাতে। পুরো দল ছিল বিশ্বকাপ ট্রফির জন্য অধীর হয়ে। কিন্তু কাতারে তাদের শুরুটা হয় বড় ধাক্কা খেয়ে। সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হারে খাদের কিনারায় পড়েছিল তারা।
এরপরের গল্প অবিস্মরণীয় প্রত্যাবর্তনের। একে একে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারিয়ে গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে ওঠে আর্জেন্টিনা। সেখানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে নিশ্চিত করে কোয়ার্টার ফাইনাল। শেষ আটে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে উত্তাপ ছড়ানো টাইব্রেকার জিতে সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে দেয়।
স্বপ্ন পূরণ থেকে আর এক ধাপ দূরে ছিল আর্জেন্টিনা, ফাইনালে প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে হাজার হাজার আর্জেন্টাইন দর্শক ঘরের মাঠ বানিয়ে ফেলে। তাতে উজ্জীবিত হয়ে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আলবিসেলেস্তেরা। কিন্তু শেষ দিকে কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোল তাদের হতবাক করে দিয়েছিল। অতিরিক্ত সময়ে মেসি গোল করে এগিয়ে দেন, কিন্তু পাল্টা গোল করেন এমবাপ্পে। ৩-৩ গোলে ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হলে হয় টাইব্রেকার। সেখানে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের বীরত্বে ৪-২ গোলে জিতে ৩৬ বছরের ট্রফি খরা ঘুচায় আর্জেন্টিনা। মেসি পেয়ে যান তার একমাত্র অধরা ট্রফি।
মরক্কোর চমক এবারের বিশ্বকাপের চমক মরক্কো। কাতারে তারা বিস্ময়কর পারফরম্যান্স করে বিশ্বের নজর কেড়েছে। আফ্রিকা ও আরব বিশ্বকে তুলে ধরেছে অনন্য উচ্চতায়। গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা বেলজিয়াম ও কানাডাকে হারিয়ে। এরপর নকআউটে স্পেন ও পর্তুগালকে বিদায় করে প্রথম আফ্রিকান হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে তারা। এতদূর পর্যন্ত এগোনোর পথে প্রতিপক্ষ তাদের জাল কাঁপাতে পারেনি একবারও। কিন্তু ফ্রান্সের কাছে থামতে হয় তাদের। ২-০ গোলে হেরে সেমিফাইনালে বিদায় নেয় তারা। অবশ্য ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরে চতুর্থ হয়ে নিজেদের সেরা সাফল্য অর্জন করে কাতার ছাড়ে মরক্কো এবং দেশে ফিরে পায় বীরোচিত সংবর্ধনা।
বিশ্বকাপে মেসির রেকর্ড এই বিশ্বকাপে মেসি গড়েছেন অসংখ্য রেকর্ড। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত ৭ গোল করেছেন তিনি। পেয়েছেন গোল্ডেন বল। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দুটি বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় তিনি।
এছাড়া ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে নেমে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ২৬ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন মেসি। ওই ম্যাচেই করেন নিজের শততম গোল। দ্বিতীয় গোল করে বিশ্বকাপে তার গোলসংখ্যা বাড়ান ১৩-তে। তাতে পেলেকে ছাড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে যৌথভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সময় খেলার রেকর্ডও তার, পাঁচ আসরে ২২৮৪ মিনিট খেলেছেন মেসি। হয়েছেন বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা, পেছনে ফেলেছেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে (১০)।
ফুটবলের রাজা পেলের প্রয়াণ বছর শেষ হতে দুই দিন বাকি। হুট করে এলো দুঃসংবাদ। এক মাস ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানেন ফুটবলের রাজা পেলে। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির প্রয়াণে শোকের সাগরে ভাসে গোটা বিশ্ব। কোলন ক্যানসারের সঙ্গে তার লড়াই শুরু হয়েছিল গত বছর সেপ্টেম্বরে। এরপর থেকে হাসপাতালে আসা যাওয়া ছিল নিয়মিত। জীবনে শেষবার যখন হাসপাতালে গেলেন, বিছানা থেকে উঠতে পারলেন না। তার ক্যানসার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। তবুও হার মানতে চাননি। সন্তানদের পাশে থেকে লড়াই করে গেছেন। কিন্তু অমোঘ সত্যি মেনে নিয়ে ২৯ ডিসেম্বর সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পেলে। তার শূন্যতার হাহাকার প্রতিধ্বনিত হয়ে শেষ হলো ২০২২।