তরুণ বয়স থেকেই তাদের মধ্যে অসম প্রেম। এরই মধ্যে অন্যত্র বিয়ে হয় প্রেমিকার। একইভাবে প্রেমিক মাসুদ মিয়াও বিয়ে করেন আরেক মেয়েকে। তবুও থামেনি উভয়ের মন দেওয়া-নেওয়া। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে স্বামীর ঘর ছাড়েন ওই নারী। কিন্তু মাসুদ তাকে বিয়ে করেননি। ফের আরেক স্থানে বিয়ে করেন প্রেমিকা। সেখান থেকে আবারও বিয়ের আশ্বাসে বাড়ি ডেকে আনেন মাসুদ। এরপর তাকে রেখে লাপাত্তা হন কথিত সেই প্রেমিক।
এমন ঘটনা ঘটেছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত প্রেমিক মাসুদ মিয়ার বাড়িতে অনশন করেন প্রেমিকা।
অভিযুক্ত মাসুদ মিয়া গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের মওয়াগাড়ী গ্রামের আব্দুল জোব্বার মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মওয়াগাড়ী গ্রামের মাসুদের সঙ্গে এক তরুণীর দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই মধ্যে পারিবারিক সিদ্ধান্তে ওই তরুণীকে অন্যত্র বিয়ে দেন স্বজনরা। কিন্তু মাসুদের সঙ্গে থেমে থাকেনি তার প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে ওই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখান মাসুদ। এতে প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন তরুণী। এরপর থেকেই মাসুদকে বিয়ের জন্য তাগিদ দিতে শুরু করেন তরুণী। কিন্তু টালবাহনা করতে থাকেন মাসুদ। এভাবে বেশ কিছুদিন যাবার পর বাধ্য হয়ে ওই তরুণী দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করেন। এমনকি সুখের সংসারের জন্য দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন তরুণী। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও মাসুদের সঙ্গে জড়িয়ে পরেন তরুণী। এরপরই বিয়ে করবে মর্মে ওই তরুণীকে নিজের বাড়িতে আসতে বলেন মাসুদ। তার কথামতো গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বামী-সন্তানকে ফেলে ঢাকা থেকে এসে সারসরি মাসুদের বাড়িতে ওঠেন তরুণী। কিন্তু মাসুদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন প্রেমিকা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কতিপয় লোকজন ও পুলিশ সদস্যরা ওই তরুণীকে স্থানীয় ইউপি সদস্য লাভলী বেগমের জিম্মায় দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, মাসুদের সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের প্রেম। তিনি আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিতেন। সেই প্রলোভনে প্রথম স্বামীর ঘড় ছেড়েছি। আবার বিয়ে করার কথা বলে মাসুদ আমাকে ঢাকা থেকে ডেকে এনেছে। তাই দ্বিতীয় স্বামী ও ২ সন্তান ফেলে মাসুদকে বিয়ের করার জন্য এসেছি।’
এ ঘটনায় মাসুদ মিয়া ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য লাভলী বেগম বলেন, ‘বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় ওই তরুণীকে আমার হেফাজতে রেখেছি। এখন বিষয়টি থানা পুলিশকে জানাবো।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ পরিদর্শক (এসআই) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে ওই যুবককে না পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে সংরক্ষিত নারী সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এনিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কিংবা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ করেনি।’
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। ছেলের পরিবারের কাউকে না পেয়ে ওই মেয়েকে নারী ইউপি সদস্যের বাড়িতে রেখে এসেছে। মেয়েটা বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা।’