পেট্রোল বোমা হামলা ও আগুন সন্ত্রাসের হুকুমদাতা বিএনপি নেতাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের নব-নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা যে ন্যায়নীতির কথা বলেন, ২০১৩-১৪-১৫ সালে যে মানুষের ওপরে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করেছেন। সেই পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের হুকুমদাতা বিএনপি নেতারা।
হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সেই হুকুমদাতাদের মধ্যে একজন। এভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যার পর এখনও যে তারা ঘুরে বেড়ায়; এটাই-তো জনগণের কাছে একটা আশ্চর্যজনক বিষয়।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভা নিয়ে জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল (রোববার) একটা অসাধারণ সভা হয়েছে। পুরো রাজশাহী শহরই জনসভাস্থলে পরিণত হয়েছিল। মাদ্রাসা মাঠের বাইরে কমপক্ষে আরও ১০-১২ গুণ মানুষ ছিল মাদ্রাসা মাঠের বাইরে। বিএনপিও সেখানে সমাবেশ করেছিল।
তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কতগুণ বড়, সেটা অনুমান করা কঠিন, তবে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কমপক্ষে ১২-১৪ গুণ বড়-তো বটেই। আকাশ থেকে প্রধানমন্ত্রীও সমাবেশটি দেখেছেন।
তার মতে, এটি অভাবনীয়, আমাদের ধারনার বাইরে সমাবেশটি হয়েছে। পুরো শহরজুড়ে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা, সমাবেশে যাওয়ার জন্য মানুষের যে আগ্রহ আমি দেখেছি শুরু থেকে- সেটি অভাবনীয়। তিনি বলেন, এতেই প্রমাণিত হয়- প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, তার দলের প্রতি জনগণের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মানুষকে ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য ন্যায়বিচারের জন্য, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জন্য সংগ্রাম ও লড়াই করতে হচ্ছে’ এ বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমি সবিনয়ে অনুরোধ করবো আয়নার নিজের চেহারাটা দেখানোর জন্য। নিজের দলের চেহারাটাও দেখার জন্য। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর দায়মুক্তি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে কারা বিচার বন্ধ করেছিল? বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। সেখানে ন্যায় বিচার নয়; বিচারটাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। সেই বিচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আর ভোটের অধিকার? জিয়াউর রহমানের সময়, সাত্তার সাহেবের সময়, খালেদা জিয়ার সময়, এরশাদ সাহেবের সময় স্লোগান ছিল ১০টি হোন্ডা, ২০টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। এখন মানুষ সেই স্লোগান দেয় না। সেই সংস্কৃতি তারাই চালু করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন বিএনপিই করেছিল। তারা এক মাসের বেশি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আয়নার নিজের চেহারাটা দেখলেই উনি উত্তরটা পেয়ে যাবেন।
হাছান মাহমুদ মনে করেন, এ দেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘন শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিলেন। যে সেনাকর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, যারা ক্ষমতা দখল করলো, তাদের প্রচণ্ড বিশ্বস্ত না-হলে জিয়াউর রহমানকে কী সেনাপ্রধান করা হতো বলে প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি বিস্তারিত বলতে চাই না। আজকে সেগুলো প্রমাণিত, দিবালোকের মতো স্পষ্ট সত্য। জিয়াউর রহমান নিজের ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসারকে বিনাবিচারে ফাঁসি দিয়েছেন। অনেকের ফাঁসি হয়ে গেছে, ফাঁসির রায় হয়েছে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর- এমন ঘটনাও আছে।
মন্ত্রী বলেন, মায়ের কান্না নামের একটি সংগঠন, তাদের বোবা কান্না যে আজকে আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, সেটি এখন বিদেশি কূটনৈতিকদের কানেও গেছে, বিদেশেও গেছে। এগুলো সব জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের শিকার।
এসময় প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ, সহ-সভাপতি রেজোয়ানুল হক রাজা, যুগ্ম-সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া ও আশরাফ আলী, কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, সদস্য ফরিদ হোসেন, কাজনী রওনক হোসেন, শাহনাজ সিদ্দীকি সোমা, কল্যাণ সাহা, শাহনাজ বেগম পলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।