লিওনেল মেসিকে সবাই চেনে শান্তশিষ্ট ফুটবলার হিসেবে, যিনি শুধু তার পায়ের জাদু দিয়ে শাসন করেন মাঠ। কিন্তু বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা গিয়েছিল অচেনা মেসিকে। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের ক্ষোভের আগুনে পুড়িয়ে দেন, ছাড়েননি কোচকেও। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। প্রায় দুই মাস পর ওই আচরণের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করলেন তিনি।
গত ৯ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচটি নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে ২-২ ছিল। টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে আলবিসেলেস্তেরা। উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচ শেষে সমালোচিত হন মেসি ও তার সতীর্থরা।
৭৩তম মিনিটের পেনাল্টি গোলের পর মেসি দৌড়ে ডাচ কোচ লুইস ফন গালের সামনে গিয়ে কানের পেছনে হাত দিয়ে বিতর্কিত উদযাপন করেন। খেলা শেষে তিনি দাবি করেন, ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনাকে অসম্মান করে মন্তব্য করেছিলেন। প্যারিসে অ্যান্ডি কুসনেতজোফের সঙ্গে ‘পেরোস দে লা কাল্লে’-তে এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, ‘আমি জানতাম ফন গাল কী বলেছিল কিন্তু এটা (গোল উদযাপন) ওই মুহূর্তের উত্তাপে ঘটে গিয়েছিল। আমি যা করেছি, ভালো করিনি। পরে যা হয়েছিল, তাও ভালো লাগেনি। এগুলো হয়েছিল স্নায়ুচাপের কারণে, সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে গেলো।’
ফুল টাইমের বাঁশি বাজার পর আর্জেন্টিনা অধিনায়ককে ফন গাল ও তার সহকারী এডগার ডেভিডসের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায়। জানা গেছে, খেলা শেষের সাক্ষাৎকারে নেদারল্যান্ডসের গোলদাতা ওট ওয়েঘোর্স্টের দিকে চিৎকার করেছিলেন মেসি, ‘বোকার মতো তাকিয়ে কী দেখছো? ওদিকে যাও।’
ফাইনালে মেসিরা ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছরের শিরোপা খরা ঘুচিয়ে বিশ্বকাপ জেতেন। চ্যাম্পিয়ন হলেও ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের আক্ষেপ, ডিয়েগো ম্যারাডোনার হাত থেকে ট্রফিটা নিতে না পারা। দুই বছর আগে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক।
মেসি বলেন, ‘খুব ভালো লাগতো যদি ডিয়েগো ম্যারাডোনা (বিশ্ব) কাপটা আমার হাতে দিতেন কিংবা অন্তত এসব দেখতে পারতেন। আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখা, তার কত তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল এবং তিনি জাতীয় দলকে কতটা ভালোবাসতেন। আমি মনে করি তিনি উপর থেকে এবং আমাকে যারা ভালোবাসেন, তারা আমাকে শক্তি দিয়েছেন।’