ই-পাসপোর্ট ইস্যু ও অপারেশন সাপোর্ট সংক্রান্ত জার্মানি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় আরও ১৬ মাস বাড়ানো হচ্ছে। এই সময়ে জন্য সংস্থাটিকে প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণের জন্য পরিশোধ করতে হবে সমপরিমাণ ৮৮ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৪ টাকা।
সূত্র জানায়, ‘বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। গত ২০১৮ সালের ২১ জুন একনেক সভায় ১০ বছর মেয়াদে (২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন) প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৪৬৩৫ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৪০৪ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার টাকার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জি-টু-জি পদ্ধতিতে জার্মানির ভেরিডস জিএমবিএইচ সঙ্গে ২০১৮ সালে মূল চুক্তি এবং পরবর্তীতে ২০২২ সালে ১ম সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মূল চুক্তি অনুযায়ী সংস্থাটি প্রকল্পে ২ বছর মেয়াদী অপারেশন সাপোর্ট দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ।
সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ফোর্স ম্যাজিওর ঘোষণার প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের সম্মতিতে অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদকাল ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রকল্পে নিয়োজিত জনবল দিয়ে উচ্চ কারিগরি এবং অপারেশন সাপোর্ট কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করা সম্ভবপর নয়। এজন্য প্রকল্পে উচ্চ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল এবং বর্তমানে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার, ই-পাসপোর্ট বুকলেট, অ্যাসেম্বলি লাইন (ইপিবিএএল), ডাটা সেন্টার (ডিসি), ডিজাস্টার রিকভারি সাইট (ডিআরএস)-এ অপারেশন সাপোর্ট দেওয়ার কাজে নিয়োজিত জনবলের প্রতিস্থাপক নবল সংস্থানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অনুমোদন সাপেক্ষে চাহিদাকৃত জনবলের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের জন্য আরও সময় প্রয়োজন।
সূত্র জানায়, বিষয়টি প্রকল্পের ১০ প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হলে প্রকল্পের চলমান অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদকাল ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রেক্ষিতে সুরক্ষ সেবা বিভাগ কর্তৃক গত ২০২২ সালের ২৩ জুন তারিখে অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদ ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে। পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকল্পের অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর এবং ডিপিপির সংস্থানের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে।
সূত্র জানায়, সময় বাড়ানোর বিষয়ে মূল্যায়ন কমিটির আর্থিক মূল্যায়ন এবং নেগোশিয়েশন প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, চুক্তি অনুযায়ী ভেরিডোস জিএমবিএইচ-এর দেওয়া দুই বছর মেয়াদী অপারেশন সাপোর্টের চুক্তিমূল্য এক কোটি ৪২ লাখ ১১ হাজার ৬৯৮ ইউরো, সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৮ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৯১৮ টাকা। তবে প্রাথমিকভাবে ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক অপারেশন সাপোর্ট ১৬ মাস বাড়ানোর জন্য ৯০ লাখ ৬০ হাজার ইউরো, সমপরিমাণ ৮৮ কোটি ৪১ লাখ ২৭ হাজার ৩৪৮ টাকা আর্থিক প্রস্তাব পাঠানো হয়। এ প্রেক্ষিতে নেগোশিয়েশনের পরে দরদাতা অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য নেগোশিয়েশন সভায় এর মূল্যায়ন কমিয়ে চূড়ান্তভাবে ৯০ লাখ ৩০ হাজার ইউরো, সমপরিমাণ ৮৮ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৪ টাকার আর্থিক প্রস্তাব পাঠায়। সে প্রেক্ষিতে মূল্যায়ন কমিটি ভেরিডোস জিএমবিএইচ-এর প্রস্তাবিত কারিগরি প্রস্তাবনা উপযুক্ত হওয়ায় এবং প্রস্তাবিত মূল্য, বিদ্যমান মূল্য ও বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য হওয়ায় এবং দাপ্তরিক প্রাক্কলিত মূল্য সীমার মধ্যে থাকায় সংস্থাটির সঙ্গে অপারেশন সাপোর্ট ১৬ মাস বাড়ানোর জন্য ৯০ লাখ ৩০ হাজার ইউরো, সমপরিমাণ ৮৮ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৪ টাকায় চুক্তি স্বাক্ষরের সুপারিশ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। কমিটি অনুমোদন পাওয়া গেলেই জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ এর সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে।