মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের ত্রিশালের ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদসহ ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেরর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
দণ্ডিত অপর আসামিরা হলেন–মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রব্বানী ও মো. ফখরুজ্জামান। তাদের মধ্যে ছাব্বির ও ফখরুজ্জামান পলাতক। বাকি তিন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।
মু্ক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গুম ও অপহরণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, রায়ের আগে কারাগারে কাটানোর সময় সাজা থেকে বাদ যাবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৯ মে এমপি হান্নানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলাটি করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন। মামলায় জাতীয় পার্টির তৎকালীন সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ছাড়াও জামায়াত নেতা ফখরুজ্জামান ও গোলাম রব্বানীকে আসামি করা হয়। পরে তদন্তে আরও পাঁচজনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় মামলার আসামি করা হয় মোট আটজনকে।
পরের বছর ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর এমপি হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ২৭ মে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। বিচার শেষে গত ২৩ নভেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে ট্রাইব্যুনাল।
এই মামার আট আসামির মধ্যে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ এবং অপর এক আসামি মিজানুর রহমান মন্টু মারা যান। অপর ৫ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন ডা. খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমদ, হরমুজ আলী ও আব্দুস সাত্তার। আর পলাতক আছেন ফখরুজ্জামান ও খন্দকার গোলাম রব্বানী।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।