উপমহাদেশের উইকেট কেমন হবে তা অনেকটাই জানা ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলারের। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ নিয়মিত খেলায় সব তার নখদর্পনে। সঙ্গে বিপিএলও খেলেছেন এক মৌসুম।
তাইতো মিরপুরের উইকেট কেমন হবে তা জানতে চাইলে মৃদু হাসি দিয়ে বললেন, ‘প্রত্যাশা তো করছি স্লো এবং লো উইকেট। এমন কন্ডিশন যেটা আমাদের জন্য কঠিন।’
আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের তিন ম্যাচ খেলতে ইংলিশ ক্রিকেট দল এখন ঢাকায়। পহেলা মার্চ মিরপুরে শুরু হবে দুই দলের প্রথম ম্যাচ। ঢাকায় দুই ম্যাচের উইকেট ধীর গতির হবে, বল ঘুরবে তা মাথায় নিয়েই এসেছেন বাটলার, মঈন আলীরা।
ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারাতে বাংলাদেশ ঘরের মাঠের সুবিধা ব্যবহার করবে তা সবারই জানা। উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোর জন্য বাংলাদেশের একটাই ফাঁদ ‘স্লো অ্যান্ড স্পিন উইকেট।’ তবে এই হোম কন্ডিশন ব্যবহারে কোনো আপত্তিই নেই ইংলিশ অধিনায়কের, ‘এসব নিয়ে কখনো চিন্তা করা হয়নি। বাংলাদেশ হোম কন্ডিশনে বেশ ভালো দল। নিশ্চিতভাবেই তারা ঘরের মাঠে সুবিধা নিতে চাইবে। শেষ কয়েক বছর ধরে তারা এটা ব্যবহার করছে। ফেয়ার এনাফ।’
তবে এই ধরণের কন্ডিশনে খেলার সুবিধাও দেখছেন বাটলার। অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে বসবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের কন্ডিশনে ম্যাচ খেলে নিজেদের পরীক্ষা করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাটলার, ‘নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। ঘরের মাঠে তাদের হারানো কঠিন। যেটা বললেন, তারা কিছুদিন আগেই ভারতকে হারিয়েছে। এই মুহূর্তে এরকম চ্যালেঞ্জের প্রত্যাশায় আমরা আছি। কারণ বিশ্বকাপের খুব বেশি দিনের বাকি নেই। প্রায় একই ধরণের কন্ডিশনে নিজেদের পরীক্ষা করার বড় সুযোগ। আমরা দলগতভাবে কোন অবস্থায় আছি সেটা জানা হয়ে যাবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাব বাটলার যোগ করেন, ‘আমরা ভারতের সবচেয়ে কাছাকাছি কন্ডিশন এখানেই পাচ্ছি। তাই প্রস্তুতির এটা বড় সুযোগ। সেপ্টেম্বরের আগে এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ নিজেদের পরীক্ষা নেওয়ার। এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং এবং আমরা মুখিয়ে আছি চ্যালেঞ্জের জন্য।’
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে সীমিত পরিসরের ক্রিকেটে নতুন পথ চলা শুরু হয় বাংলাদেশের। এ সময়ে ১৩ ওয়ানডে সিরিজের ১২টি জিতেছে বাংলাদেশ। কেবল একটি হেরেছে ২০১৬ সালে। তাও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে। লম্বা এ সময়ে ৩৯ ম্যাচের ৩০টি জিতেছে। হেরেছে ৯টিতে। ঘরের মাঠে জয়ের পাশাপাশি বিদেশেও সাফল্য আছে বাংলাদেশের। ইংল্যান্ড বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। শক্তি, সামর্্যে ও অতীত সাফল্যে তাদেরকেই ফেভারিট মনে করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতিও রয়েছে। তবে বাটলার মনে করছেন, বাংলাদেশ তাদেরকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীতাই দেবে।
‘সেটা অনেক পুরোনো কথা (২০১৬ সালের সিরিজ জয়)। ঘরের মাঠে বরাবরই বাংলাদেশের রেকর্ড বেশ ভালো। আমাদের দলে বেশ ভালোমানের খেলোয়াড় আছে। আমরা চ্যালেঞ্জটা নিতে মুখিয়ে আছি। উপমহাদেশে যারা শেষ কয়েক বছর খেলেছে তাদের নিয়ে আমরা এসেছি। বেশি কিছু খেলোয়াড় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগও খেলেছে। তাদের সবারই ধারণা আছে এখানে কেমন ক্রিকেট হতে পারে। সহজ হবে না নিশ্চিতভাবে তবে আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি।’
২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ হেরে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। অ্যাডিলেডে ওই হারের পর ইংল্যান্ড নিজেদের গুছিয়ে চার বছরে বিশ্বকাপের মুকুট জিতে। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের যতবারই খেলা হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়েছে, কথা ছোঁড়াছুড়ি হয়েছে, উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বাটলারের কাছে সেসব নিয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রতিপক্ষকে সমীহ করে মাঠের বাইরের ইসু্যগুলো এড়িয়ে যান ইংলিশ অধিনায়ক, ‘আমি জানি না। তবে দুই দল যখনই মাঠে নামে ভালো ক্রিকেট খেলে। এবারও প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ সিরিজই প্রত্যাশা করছি।’