ইলিশের অভয়াশ্রম রক্ষায় ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার (১ মার্চ) থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা ওবায়দুল্ল্যা।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে- ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার এবং সদর উপজেলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালী জেলার চর রুস্তম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকা।
মোল্লা ওবায়দুল্ল্যা বলেন, মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর ইলিশ রক্ষায় আমরা জেলেদের নিয়ে সচেতনতা সভা করেছি। জেলেরা মাছ শিকারে যাতে নদীতে না যান সেজন্য প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। তারপরেও যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের চেষ্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিদিন ১৪টি টহল টিম নদীতে অভিযানে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ রক্ষায় আমাদের কঠোর অভিযান অব্যহত থাকবে। নিষেধাজ্ঞার দুইটি পয়েন্টে বৈধ অবৈধ সব ধরনের জাল ফেলা নিষিদ্ধ।
এদিকে, নিষেধাজ্ঞার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ভোলা জেলার দুই লাখের বেশি জেলে। মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল এসব জেলে নদীতে যেতে না পারায় চরম সঙ্কটে মধ্যে পড়বেন বলে জানিয়েছেন। মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজ জানা না থাকায় বিকল্প কর্মসংস্থানেও যেতে পারছেন না জেলেরা। এতে অভাব-অনাটন আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটবে জেলেদের।
ভোলা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নিবন্ধিত জেলেদের প্রত্যেকে আগামী দুই মাসের জন্য ৪০ কেজি করে মোট ৮০ কেজি চাল পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৮৯ হাজার জেলের জন্য। জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার। ফলে অনেক জেলেই চাল পাবেন না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভোলা সদরের উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের জেলে ইলিয়াস, ফোরকান সবুজ মিয়া বলেন, আজ থেকে নদীতে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন কিভাবে দিন কাটাবো। গত মৌসুমে তেমন মাছ ধরতে পাড়িনি। কিছুদিন হলো পোয়া মাছ পড়ছে। এখন মাছ ধরা বন্ধ তাই আবার সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হলো আমাদের।
লালমোহন উপজেলার বাত্তিরখাল মৎস্য ঘাটের জেলে মনির মাঝি বলেন, ৬ সদস্যের পরিবার আমার। প্রতিদিন ২ কেজি করে চাল লাগে অন্য খরচাতো আছেই। সরকারের বরাদ্দকৃত চাল যেনো দ্রুত দেওয়া হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।
চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মৎস্য ঘাটের জেলে কাঞ্চন মাঝি, গিয়াস মাঝি ও বেলায়েত মাঝির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একদিকে আয়-রোজগার বন্ধ, অন্যদিকে ঋন আর দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে আাছি আমরা। তাই দ্রুত চাল দেওয়ার দাবি আমাদের।