সারা বাংলা

স্বাভাবিক পঞ্চগড়

দিনভর গোলাগুলির শব্দে উত্তপ্ত ছিলো পঞ্চগড় শহর। মহাসড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো ইট পাথর। বন্ধ ছিলো যান চলাচল। ঘটেছিলো দোকানপাটসহ বিভিন্নস্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও। চতুর্দিকে বিরাজ করছিলো আতঙ্ক। তবে একদিনের ব্যবধানে স্বাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি। সবকিছুই যেন চলছে আগের মতো। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) বার্ষিক সালানা জলসা স্থগিত ঘোষণা করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

শনিবার (৪ মার্চ) সকাল থেকে পঞ্চগড় জেলা শহরে চাঞ্চল্য ফিরেছে। সড়কে যানবাহন চলছে আগের মতোই, খুলছে দোকানপাটও।

আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২ 

এর আগে, গতকাল শুক্রবার আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) বার্ষিক সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পঞ্চগড়। জলসা বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে সেসময় বিক্ষোভ করতে সড়কে নেমে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের একজন এবং স্থানীয় এক ব্যক্তি নিহত হন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর আহমদিয়াদের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে জেলা শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদের ডাকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বড় পরিসরে চৌরঙ্গী মোড়ের দিকে আসতে থাকে। পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের ওপর হামলা করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে লোকজন। এসময় পুলিশও টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি ও ট্রাফিক পুলিশের অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। 

আরও পড়ুন: সালানা জলসা স্থগিত, পঞ্চগড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা পঞ্চগড় বাজারে আহমদিয়াদের চারটি দোকানের মালামাল বের করে আগুনে পুড়ে দেয়। তাদের অন্তত ২০ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আহমদিয়া সম্প্রদায়।

দীর্ঘদিন ধরেই আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলো সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন। এবার পঞ্চগড়ের আহমদনগর এলাকায় ৩ মার্চ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসার আয়োজন করে। এই জলসা বন্ধ করার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধসহ ভাঙচুর ও আহমদিয়াদের বাড়িতে হামলা করে ইসলামী সংগঠনগুলোর কর্মী সমর্থকরা। শুক্রবারও বিক্ষোভ করে তারা। এরপরেই সংঘর্ষ বাঁধে। 

আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মুসল্লি-পুলিশ সংঘর্ষ, বিজিবি মোতায়েন

পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধ ঘোষণা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমান পঞ্চগড় শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।