পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে নৌকাডুবিতে ৭২ জনের প্রাণহানির ঘটনায় নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়ের করা মামলায় ঘাটের ইজারাদার আব্দুল জব্বার (৫৫) ও মাঝি বাচ্চু মিয়া (৪৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে অভিযান চালিয়ে বোদা উপজেলার মাড়েয়া এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আদালতের মাধ্যেমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে নৌকাডুবির কারণ হিসেবে ইজারাদার আব্দুল জব্বারের গাফিলতির অভিযোগসহ নৌকার অদক্ষ চালক হিসেবে (মাঝি) বাচ্চু মিয়া এবং রবিউল ইসলামকে দায়ী করা হয়।
এছাড়া সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় কুসংস্কার, ধর্মীয় অনুভূতি, অসচেতনতা, নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ওঠা, নৌকার ইঞ্জিনে ত্রুটিসহ বেশি কিছু কারণও চিহ্নিত করা হয় প্রতিবেদনে।
তদন্তের মাধ্যমে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক মো. সফিকুর রহমান বাদী হয়ে ঘাটের ইজারাদার আব্দুল জব্বার, নৌকার চালক বাচ্চু মিয়া এবং রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে নৌ অধিদপ্তর অধ্যাদেশ আইনে নৌ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় বলেন, এই মামলার বিষয়ে আমরা তেমন কিছু জানিনা। নৌ অধিদপ্তর আদালত থেকে আমাদের কাছে নামীয় আসামিদের ওয়ারেন্ট আসলে মঙ্গলবার আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করি। পরে ওইদিন বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সনাতন ধর্মালম্বীদের মহালয়া উৎসবে যোগ দিতে শতাধিক নারী পুরুষ বোদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনায় নারী, পুরুষ এবং শিশুসহ ৭২ জন নিখোঁজ হন। পরে ৭১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরেন্দ্রনাথ বর্মন (৬৫) নামে একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।