নাকে আর গালে জিঙ্ক ক্রিম মেখে বল হাতে দৌড়ে আসছেন ২২ গজে। চোখে মুখে সে কী আগ্রাসন! ব্যাটসম্যানের জন্য রীতিমতো আতঙ্ক। বলে তুখোড় পেস। সঙ্গে বৈচিত্র্যও। শরীরের ওপর তাক করা বাউন্স দিতেন অহরহ। সাড়ে ৫ আউন্সের চর্মগোলকটি দিয়ে অগণিত নামীদামী ব্যাটসম্যানের মনে কাঁপন ধরিয়েছেন। সাফল্যের স্তূপ বানিয়েছেন। বিশ্ব ক্রিকেটে তিনি পরিচিত ‘সাদা বিদ্যুৎ’ নামে। বোলিংয়ে আগ্রাসনই ছিল ডোনাল্ডের সাফল্যের রেসিপি। সেই রেসিপি এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দিয়েছেন পেস বোলিং কোচ।
ডোনাল্ডের এই পথ চলার সঙ্গে সঙ্গী হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। দ্বিতীয় মেয়াদে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসার পর থেকে কেমন করবেন তা নিয়ে চলছিল আলোচনা। মাঠের ক্রিকেটে সেই পুরনো ভয়ডরহীন ক্রিকেট, আগ্রাসী মনোভাব ফুটে উঠে। ডোনাল্ডের মতো আগ্রাসী মানসিকতার পূজারী হাথুরুসিংহে। দুজনের পথ এক হওয়াতে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বইছে সুবাতাস।
দুজনের আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যৌথ প্রযোজনায় উড়ছে বাংলাদেশও। হাথুরুসিংহে কোচ হয়ে আসার পর ডোনাল্ডেরও ভালো সময় কাটছে তা বোঝা গেল এমন উত্তরে, ‘আমি এখানে এক বছর ধরে আছি। এই দলের সঙ্গে আমার কাজের কখনও পরিবর্তন হয়নি। হাথু (হাথুরুসিংহে) একজন আগ্রাসী কোচ, আমার কোচিংয়ের ধরনও তাই। তিনি এসেই পুরো দলের মাঝে আগ্রাসী মানসিকতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। জয়ের প্রশ্নে ভয় পেও না। দারুণ এক বার্তা।’
হাথুরুসিংহের যে জিনিসটি ডোনাল্ডের বেশ মনে ধরেছে তা হলো, ‘দলে তিনি দারুণ এক ব্যক্তিত্ব এবং সবাইকে স্বাধীনভাবে খেলার বার্তা দিয়েছেন। আমি মনে করি, (তার ওই বার্তা পেয়ে) তারা (খেলোয়াড়রা) নিজেদেরকে উন্মুক্ত করেছে এবং আগ্রাসী ক্রিকেট খেলছে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ওয়ানডেতে ৩৩৮ ও ৩৪৯ রান করে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের কারিশমা ফুটিয়ে তুলেছেন। স্পিনারদের পাশাপাশি পেসাররাও ছিলেন আগ্রাসী। ইবাদতের ৪ উইকেটের সঙ্গে তাসকিন ২ উইকেট নিয়ে দলের রেকর্ড রানের জয়ে অবদান রাখেন।
পেসারাদের এমন পারফরম্যান্স, অকুতোভয় মানসিকতা তাদের এগিয়ে নেবে বলে বিশ্বাস ডোনাল্ডের, ‘যখন আমার বয়স ১৬, ১৭ বছর, তখন থেকে আমার মানসিকতা পরিবর্তিত হয়নি। মানসিকতা হতে হবে আগ্রাসী। কাউকে আমার এমন একটি ভূমিকা দিতে হবে যে, আমি যা করতে পারি সে-ও তা করতে সক্ষম হতে পারে। বোলিং গ্রুপে আমি ঠিক এটাই করেছি এবং এই পথ ধরে তারা যেভাবে এগিয়েছে, তা বিস্ময়কর।’