বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেছেন, ‘যারা বড় বড় শিল্প কলকারখানার মালিক তারা হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ নেন। আবার অনেকে ঋণ খেলাপিও হচ্ছেন। একজন ঋণ খেলাপির টাকা দিয়ে সারা দেশের কৃষককে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু আমাদের কৃষক ঋণ পাচ্ছে কোথায়? কৃষকদের ঋণ পাওয়ার বিষয়টি সহজ করতে প্রধানমন্ত্রী সব ব্যাংকে নির্দেশনা ও বরাদ্দ দিয়েছেন। ব্যাংক এখন কৃষকদের মাত্র চার শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছেন। এই ঋণে প্রান্তিক কৃষকরা উপকৃত হবেন।’
বুধবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে দুই দিনব্যাপী কৃষি ঋণ মেলা ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কৃষি ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অগ্রনী ব্যাংক লিমিটেডের বাগেরহাট অঞ্চলের উপ মহা-ব্যবস্থাপক মানস কুমার পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজ আল আসাদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক অমর কুমার দাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শরিফুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষি উদ্যোক্তা ও ব্যাংক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিনব্যাপী মেলায় বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, অগ্রনী ব্যাংকসহ ২২টি ব্যাংক অংশগ্রহণ করেছে। এই দুই দিনে কৃষি, মৎস্য, পল্টিখামার, পশু লালন-পালনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত সহজ শর্তে একদিনের মধ্যে উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া হবে। প্রথম দিনে ১৭১ জন কৃষি উদ্যোক্তাকে ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথি ও কৃষি উদ্যোক্তারা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শণ করেন।
ভোগান্তি ছাড়া ঋণ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আবুল হোসেন নামের এক কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, ‘ঋণ নিতে গেলে বাংকের নানা প্রকার হয়রানির শিকার হতে হয়। কাগজপত্র জোগার করতেই অনেক বেগ পেতে হয়। কিন্তু চার শতাংশ সুদে কৃষি ঋণ নিলাম কোন হয়রানি ও জামানত ছাড়াই। এই ধরণের ঋণ সুবিধা চালু থাকলে কৃষকদের আর্থিক উন্নতি হবে।’
বাগেরহাট জেলা কৃষি ঋণ বিতরণ কমিটির সদস্যসচিব অগ্রনী ব্যাংক লি. বাগেরহাট অঞ্চলের উপ মহা-ব্যবস্থাপক মানস কুমার পাল বলেন, কৃষকরা যাতে ভোগান্তি ছাড়া ঋণ পান এ জন্য আমাদের এই আয়োজন। এই মেলার মাধ্যমে প্রতিটি কৃষক ও সাধারণ মানুষকে জানাতে চাই নিয়ম মেনে চললে ঋণ পেতে কোনো ভোগান্তি হবে না। আশাকরি এই দুইদিনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষি উদ্যোক্তাকে ঋণ বিতরণ করতে পারবো।
আগামীকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে এই ঋণ মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।