কিশোরগঞ্জে ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াত-শিবিরে যোগদানের জন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করা ও গোপনে সক্রিয় করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের রফিকুল ইসলাম নামের এক ছাত্র এবং একই বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগে দুই দফা দাবিতে পরীক্ষা বর্জন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৫ম সেমিস্টারের আইন বিভাগের ছাত্র মো. রফিকুল ইসলাম। সে কিশোরগঞ্জ উত্তর জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন অনুষদের ছাত্ররা অভিযোগ করে বলেন, রফিকুল ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কর্মী-সমর্থক বৃদ্ধি করতে কাজ করছে। ঈশা খাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবিরে যুক্ত করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের টাকা-পয়সা ও ইউনিভার্সিটির টিউশন ফি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রশিবিরে যুক্ত হতে পরামর্শ দিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীরা ধারণা করছে, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ছাড়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে; সেহেতু এতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ছাত্রশিবিরে সম্পৃক্ত ছিল। বর্তমানে ঈশা খাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। এমনকি তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন না। গত ১০ এপ্রিল সামার-২৩ সেশনের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালে ৫ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম অসদুপায় অবলম্বন করায় আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম বাধা দিলে শিক্ষার্থী রফিকুল কেন্দ্র পরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলামের সাথে চরম বেয়াদবি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। এমনকি, এই শিক্ষককে গুম করে ফেলার হুমকি দেয়।
এরই প্রেক্ষিতে শিবির নেতা রফিকুল ইসলাম এবং আইন বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিমের বহিষ্কারের দাবিতে মঙ্গলবার সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রফিকুলকে সাময়িক বহিষ্কার ও তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ।