রাজশাহীতে নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুক্রবার (এপ্রিল) বাঙালির চিরায়ত উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে জেলা শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বর্ষবরণের উৎসব।
অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। বর্ষবরণ আয়োজন রাজশাহীর সাহিত্যপ্রেমী সৃষ্টিশীল মানুষদের এক মিলনমেলা হয়ে ওঠে। ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা’ -এ মূলমন্ত্রে সাজানো হয়েছিল পুরো অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) এএনএম মঈনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রশিদুল হাসান, রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন ও রেঞ্জ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহা. শাহজাহান মিয়া।
এর আগে সকালে নগরীর বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিশু একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে সকাল ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাংলা নববর্ষের বৈশাখী উৎসব শুরু হয়। চারুকলা চত্বরে জাতীয় সঙ্গীত ও ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী।
বৈশাখী উৎসব উদ্বোধন করে উপাচার্য বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি। পয়লা বৈশাখ বাঙালি নববর্ষ। বৈশাখ বাঙালির জীবনে কী গ্রামে, কী শহরে নিয়ে আসে নতুনের সমারহ। স্বাভাবিক জীবন যাত্রাতেও থাকে এক নতুনের আগমন ধ্বনি ও প্রাণচাঞ্চল্য। বাঙালি সংস্কৃতিতে নানা সময়ে নানাভাবে অন্য সংস্কৃতির মিশ্রণ ঘটেছে। কিন্তু নব বঙ্গাব্দ একান্তভাবে বাঙালির নববর্ষ। বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে এই নববর্ষের সম্পর্ক চির অবিচ্ছেদ্য। দুঃখ-গ্লানি, অতীতের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে সমৃদ্ধ আগামীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার শপথের দিনও পহেলা বৈশাখ। দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার দিনও এই পহেলা বৈশাখ। সেই প্রত্যয়ে সবাইকে একতাবদ্ধ হতে তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা চত্বর থেকে বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।