সারা বাংলা

বগুড়ায় ডাকঘর প্রহরীকে হত্যা করে ডাকাতির চেষ্টা

বগুড়ার প্রধান ডাকঘরের ভোল্ট কেটে ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে। এ সময় প্রহরীর দায়িত্বে থাকা প্রশান্ত আচার্য নামে ডাকঘরের অফিস সহায়ককে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মারা যাওয়া প্রশান্তের ভাই গোবিন্দকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়েছে।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকালের কোনো এক সময় ঘটনাটি ঘটে। 

নিহত প্রশান্ত বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বেজোড়া উত্তরপাড়া গ্রামের প্রাণকৃষ্ণ আচার্যের ছেলে।

মারা যাওয়া প্রশান্তের চাচাতো ভাই দুলাল আচার্য বলেন, “আজ (সোমবার) সকাল সাড়ে ৭টায় প্রশান্ত তার ভাই গোবিন্দকে মোবাইল ফোন করে জানায় ‘ভাই তাড়াতাড়ি আয়, এসে আমাকে বাঁচা, আমাকে মেরে ফেলে দিলো।’ এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ। পরে গোবিন্দ আমাদের জানায়। আমরা সবাই পোস্ট অফিসে এসে গেট বন্ধ পাই। পরে পুলিশকে জানায়। পুলিশের সহযোগিতায় ভেতরে ঢুকে ভাইকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।”

নিহত প্রশান্তের বড় ভাই পরেশ আচার্য বলেন, ‘আমরা ডাকঘরের ভেতরে ঢুকে দেখি ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে। তার হাত বাধা। কপালে রক্ত। পরিকল্পনা করেই আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, প্রশান্তকে অনেকেই হিংসে করতো। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতেই এই ডাকাতির নাটক সাজানো হয়েছে।’

ডাকঘরের প্রহরী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো সারা বছর ছুটি পাই না। ঈদের কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের দুই দিনের ছুটি দিয়ে প্রশান্ত আর মিঠুকে প্রহরীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। নিহত প্রশান্ত ডাকঘরের অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন।’

ডাকঘরের সহকারী পোস্টমাস্টার রাকিব বিশ্বাস বলেন, ‘প্রশান্তকে খুন করা ছাড়াও আমাদের বেশ কিছু টাকা পয়সা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। কত টাকা নিয়ে গেছে এটা ইনভেন্টরি না করলে আমরা বুঝতে পারবো না। ডিসি অফিসের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আমরা ইনভেন্টরি করবো। নিহত প্রশান্ত অন্য ধর্মের হওয়ায় তাকেসহ মিঠু নামের আরেকজনকে ঈদের ছুটিতে প্রহরীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। মিঠু আগের রাতে ডিউটি করেছেন। কিন্তু গতরাতে করেছেন কিনা সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না।’

বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে ডাকাতি চেষ্টা মনে হচ্ছে। ভোল্ট মেশিন ভাঙার বেশ কিছু যন্ত্রপাতি আমরা পেয়েছি। মূল ভোল্ট কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে যেটা প্রতিয়মান হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ বা মূল্যবান সম্পদের হানি হয়নি। তবে কি কি খোয়া গেছে তালিকা করার পর বলা সম্ভব হবে। আমরা বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। 

তিনি আরও বলেন, ডাকাতির চেষ্টা এবং এই হত্যাকাণ্ড কেন ঘটলো তার রহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আমাদের গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির ক্রাইম সিন কাজ করছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ভাই গোবিন্দকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।