ডাবলিন, মালাহিড কিংবা বেলফাস্টের সবুজে ঘেরা মাঠে চাইলেই সিরিজটা আয়োজন করতে পারত আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ভারতে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নে তারা এতোটাই বিভোর যে, নিজেদের দেশে সিরিজ আয়োজন না করে তারা করছে পাশের দেশ ইংল্যান্ডে। তাতে বেড়েছে খরচ, কমেছে আয়। তা নিয়েও যেন ভ্রুক্ষেপ নেই।
বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা থাকায় বাংলাদেশকে তারা আতিথেয়তা দিচ্ছে ইংল্যান্ডের এসেক্সের চেমসফোর্ড মাঠে। এই মাঠেই আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে তিন ম্যাচ খেলবে দুই দল। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষ আটে থাকতে পারলে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ মিলবে। ১৩০ পয়েন্ট নিয়ে চারে অবস্থান করা বাংলাদেশের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়ে গেছে অনেক আগেই। তাই এই সিরিজে বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই।
কিন্তু উল্টোচিত্র আয়ারল্যান্ড শিবিরে। ২১ ম্যাচে মাত্র ৬ জয়ে আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট ৬৮। সুপার লিগের ১৩টি ম্যাচই তারা হেরেছে। তবে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ হাতছাড়া হয়নি এখনো। এজন্য কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে তাদেরকে। বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে পারলে ৯৮ পয়েন্ট নিয়ে আয়ারল্যান্ড শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে চলে যাবে বিশ্বকাপে। ৮১ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা আছে দশে। ৮৮ পয়েন্ট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়ে।
সরাসরি বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও আইরিশদের সুযোগ থাকবে ভারতের বিমান ধরার। সেজন্য জুনে খেলতে হবে কোয়ালিফায়ার রাউন্ড। এই প্রতিযোগিতা থেকে দুটি দল নাম লিখাবে বিশ্বকাপে। সেই অপেক্ষায় নিজেদের রাখতে চায় না স্বাগতিকরা। তাইতো বাংলাদেশকে কোনো ছাড় দেবে না তারা।
বাংলাদেশে আতিথেয়তা নেওয়ার সময় দলের সেরা পেসার জস লিটলকে আইপিএল খেলার জন্য ছেড়ে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু এবার ঠিকই তাকে দলে নিয়েছে। আইপিএলের মাঝপথেই তাকে দলে ফিরিয়েছে আয়ারল্যান্ড। সব ঠিকঠাক থাকলে মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম ওয়ানডেতেই বাঁহাতি পেসারকে পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে ইনজুরি মুক্ত হয়ে দলে ফিরেছেন ক্রেইগ ইয়াং। এছাড়া বাংলাদেশ সফরে থাকা টম মায়েস, ম্যাথু হামফ্রেজ ও বেন হোয়াইট বাদ পড়েছেন।
আয়ারল্যান্ডের জন্য এই সিরিজে বড় প্রাপ্তি পুরো স্কোয়াড ইনফর্ম মাঠে নামতে পারছে। অধিনায়ক বালবির্নে, স্টারলিং, কার্টিস ক্যাম্পার, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রেইনের ওপর আইরিশদের ব্যাটিং নির্ভর করছে। বোলিংয়ে লিটল নিশ্চিতভাবেই দলকে নেতৃত্ব দেবেন। এছাড়া উপমহাদেশের বাইরের কন্ডিশনে যে কোনো পেসারই বাংলাদেশকে ভোগাতে পারে।
পরিসংখ্যান, ইতিহাসে বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডের চেয়ে অনেক এগিয়ে। আবার আয়ারল্যান্ডের নিরপেক্ষ ও নিজেদের ভেন্যুতে বাংলাদেশকে হারানোর সুখস্মৃতিও আছে। তাই বাংলাদেশের জন্য কাজটা সহজ হবে না তা অনুমান করে বলা যায়। পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ হাতছানি দিচ্ছে আইরিশদের। তারা মাঠের ক্রিকেটে কোনো ছাড় দেবে না বলাই যায়।