কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। এই প্রবাদের যথার্থতা পূরণ যাকে বলে। বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য পৌষ মাস, আর আইরিশদের জন্য ডেকে এনেছে সর্বনাশ।
অথচ ভাগ্যের কী লিলা খেলা। ওয়ানডে সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত তিন ম্যাচের এই সিরিজ বৃষ্টির বাধা এড়ানোর জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যু ইংল্যান্ডের আয়োজন করে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু বৃষ্টি আর এড়ানো গেলো কই।
চেমসফোর্ডের কাউন্টি ক্লাব ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। বাংলাদেশ টস হেরে আগে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান জমা করে। আয়ারল্যান্ড তাড়া করতে নেমে ১৬.৩ ওভারে ৬৫ রান তুলতেই আসে বৃষ্টি। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এই ম্যাচের পয়েন্ট ভাগ হওয়াতে আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ৭৩-এ। পরবর্তী দুই ম্যাচ জিতলেও তারা দক্ষিণ আফ্রিকার ৯৮ পয়েন্ট অতিক্রম করতে পারবে না। কেবল ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়তেই তা সম্ভব ছিল।
চোকার্স খ্যাত আফ্রিকার জন্য বৃষ্টি যেন আশীর্বাদ হয়ে এলো। তারা অষ্টম দল হিসেবে সরাসরি ভারতে অনুষ্ঠেয় ২০২৩ বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে গেছে। আইরিশদের ভারতের বিমানে উঠতে হলে জিম্বাবুয়েতে বাছাইপর্বের বাধা পেরোতে হবে। বলতে গেলে এই সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ হয়ে গেলো এখন শুধু নিয়মরক্ষার।
চেনা কন্ডিশনে অবশ্য আয়ারল্যান্ডের পারফরম্যান্স ছিল আশাজাগানিয়া। তাদের আঁটসাট বোলিংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল ব্যর্থতায় মোড়ানো। ৩৬তম জন্মদিনে হাঁকানো মুশফিকুর রহিমের ফিফটিতে (৬১) ভর করে আড়াইশর কাছাকাছি রান করে বাংলাদেশ। ৬ রানের জন্য ফিফটি মিস করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
এ ছাড়া বলার মতো রান আর কেউ করতে পারেননি। ক্রিজে সেট হয়েও উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন সাকিব আল হাসান (২০)-মেহেদি হাসান মিরাজরা (২৭)। মিরাজ আউট হলেও মুশফিকের সঙ্গে গড়া ৬৫ রানের জুটি ছিল প্রশংসনীয়। মিরাজের সমান ২৭ রান করে আউট হন তাওহিদ হৃদয়ও। লিটন দাস শুরুতেই ফেরেন খালি হাতে আর তামিম ইকবালের ব্যাটও হাসেনি (১৪) এদিন। ইনিংসের একমাত্র ছয় আসে শরিফুল ইসলামের ব্যাট থেকে। টেল এন্ডারদের ছোট রান স্কোরবোর্ডে রেখেছে বড় অবদান। শরিফুলের ব্যাট থেকে আসে ১৬ আর তাইজুল করেন ১৪ রান। তাতেই একটা চ্যালেঞ্জিং স্কোর জমা হয় বোর্ডে।
বিশ্বকাপ আগেই নিশ্চিত হয়ে যাওয়াতে এই সিরিজ বাংলাদেশের জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের লক্ষ্য একটাই ছিল, সেরাটা দিয়ে সিরিজ জয়। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতা ম্যানেজম্যান্টের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সামনের দুই ম্যাচে (১২ ও ১৪ মে) আপাতত বাংলাদেশের লক্ষ্য হবে নিশ্চয় ব্যাট হাতে নিজেদের সেরা পারফর্ম করে সিরিজ পকেটে ডুকানো।