অর্থনীতি

পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলে আমদানি করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশীয় পেঁয়াজ উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ায় আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাজার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দাম যদি বাড়তে থাকে, তাহলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যে বাজারে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে কি না, তা মনিটরিংয়ে আগামী সপ্তাহ থেকে অভিযান চালানো হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেলে সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক বিষয়াবলীবিষয়ক ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হেলেনা কনিগের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, খোলা চিনি প্রতি কেজি ১২০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ১২৫ টাকায় ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করার জন্য বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। তারা এই মূল্যে বাজারে বিক্রি করছে কি না, তা দেখার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

তেলের দাম কমানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে মূলত ভ্যাট প্রত্যাহারের কারণে। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিলাম শুল্কছাড় অব্যাহত রাখার জন্য। কিন্তু, তারা তা করেনি। এজন্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আবার চিঠি দেবো। সামনে বাজেট আছে। এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।

ইইউ’র ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের বাজারে ২০৩২ সাল পর্যন্ত এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) স্কিমের আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় পাঁচ দশকের অংশীদারত্ব উন্নয়ন সহযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। ইইউ’র সঙ্গে বর্তমানে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদারত্ব তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির অর্ধেকের বেশি ইইউভুক্ত দেশগুলোতে হয়।

এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং সহযোগিতা কামনা করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, পণ্যের মান উন্নয়ন, সার্কুলার অর্থনীতি, জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, বাণিজ্য আলোচনার জন্য বাণিজ্য কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ইইউ পাশে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

টিপু মুনশি জানান, বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সবুজ কারখানার মধ্যে নয়টি এবং শীর্ষ ১০০টি সবুজ শিল্প প্রকল্পের মধ্যে ৪৮টি বাংলাদেশে আছে। আরও ৫৫০টি কারখানা লিড (LEED) সার্টিফিকেশন পাওয়া প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া, ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল দ্বারা প্রত্যায়িত ১৯২টি গ্রিন গার্মেন্টস কারখানাও আছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে টেকসই কমপ্যাক্ট সম্পন্ন করেছে এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ডে কেয়ার ইত্যাদির মতো সামাজিক সম্মতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলেও জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, অবকাঠামো-যোগাযোগসহ সব খাতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। অনেকগুলো মেগা প্রজেক্টের কাজ চলছে। বাংলাদেশ এখন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

হেলেনা কনিগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, তার গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে।

ইইউ’র ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশে ডিজিটাল কমার্সসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ এবং বাংলাদেশের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।