গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (গাসিক) নির্বাচনের বাকি আর ১০ দিন। নির্বাচনে জয়লাভের আশায় দিনরাত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। পথসভা, লিফটের বিতরণ, মাইকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তারা নিজেদের প্রচরণায় ব্যস্ত। প্রার্থীরা ভোটারদের মাঝে ঘুরে ঘুরে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
নৌকা প্রতীকের আজমত উল্লা খান সোমবার (১৫ মে) সকাল থেকে মহানগরীর গাছাধীন তারগাছ, মুনলাইন রাস্তার মাথায় পথসভার বক্তব্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেন। পরে গাছা থানাধীন ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭ ও ৩৮নং এলাকায় ঘুরে ঘুরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, নৌকা মার্কায় ভোট চান।
এ সময় আজমত উল্লা খান বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশনে রুপান্তরিত করার জন্য, এ নগরীতে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৭ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিলেন। ওই সাত হাজার কোটি টাকা সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সঠিকভাবে যদি খরচ করতেন, তাহলে এ নগরীর রাস্তায় মুখে রুমাল দিয়ে আসা লাগত না। এটি দুর্গন্ধ যুক্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠও এ দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষায় পায়নি। এটাকে দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশনে পরিবণত করতে চান।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন সকালে মহানগরীর টঙ্গী থানার পাগাড় এবং পূবাইল থানার বিভিন্ন এলাকা এবং বিকেলে টঙ্গীর মুদাফা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মায়ের সঙ্গে ছিলেন। প্রচারণাকালে জায়েদা খাতুন ও জাহাঙ্গীর আলম টেবিল ঘড়ি মার্কায় ভোট চান। পরে বিকেলে বাদাম এলাকায় প্রচারণার সময় কিছু লোক তাদের প্রচারণায় বাধা দেন। তাদের গাড়ি আটকে দেয়।
এ সময় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি আমার মাসহ ৩ জন নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেই৷ কিন্তু টেবিল ঘড়ি প্রতিকের জায়েদা খাতুনকে দেখতে হাজার হাজার মানুষ এগিয়ে আসে। এমন সময় টঙ্গী বাদাম এলাকায় কিছু লোক বাধা দেয়, আমাদের গাড়ি আটকে দেয়। কিন্তু পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেনি। আমি ভোটারদের কাছে অনুরোধ করি, আগামী ২৫ তারিখ ভোটের দিন কেউ যেন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ না করে। সবাই সুষ্ঠুভাবে যেন ভোট দিতে পারে।’
নির্বাচনে বিএনপি পরিবারের সদস্য ও মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম রনি সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর সমাজ কল্যাণ রোড, বনমালা ও দত্তপাড়া এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি টঙ্গীর শফিউদ্দিন কাঁচা বাজার, সাহাজ উদ্দিন স্কুলের আশপাশের এলাকা, আলম মার্কেট, মৃধা বাড়ি এলাকা, জহির মার্কেট, মাদ্রাসা রোড, বনমালা, এলাকায় গণসংযোগ করেন।
এ সময় সরকার শাহনূর ইসলাম রনি বলেন, ‘আমি নগরের জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েছি। নগরের প্রতিটি এলাকায় আমি যাচ্ছি। নগরবাসী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। এখন দেখার বিষয় নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কতটুকু থাকে।’
জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও সাবেক সচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল এলাকার মেঘডুবিতে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেন। পরে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মহানগরীর ইছালি বাজার, হায়দারাবাদ, মহানগরীর টঙ্গী এলাকার বশুগাঁও কলেজ গেট, খিলগাঁও হাই স্কুল মাঠে পথসভা করেন। পরে সেখান থেকে পূবাইল চলে যান।
গাজীপুর সিটির কোনাবাড়ী এলাকার ৬টি ওয়ার্ডে প্রচারণা ও গণসংযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘এলাকার বাজার, বাস স্ট্যান্ড, টেম্পু স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না। আমি আপনাদের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হলে গাজীপুর হবে সন্ত্রাস, দুনীতি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি মুক্ত আদর্শ নগরী।’