ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সেক্রেটারি জয় গোপাল সরকারের জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মাদ নজরুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করা হয়। বিচারক এ আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর আগামী ৫ জুন অধিকতর শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।
জামিন আবেদনে বলা হয়, আসামি জয় গোপাল সরকার ২০২০ সালের ১৪ জুলাই সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হন। মামলায় তাকে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সেক্রেটারি উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়, টাকার বিনিময়ে তিনি ক্লাবে ক্যাসিনো খেলার সুযোগ দিতেন। মামলাটিতে ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। কিন্তু, একই বছরের ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে এক বছরের মধ্যে বিচারিক আদালতকে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। আপিল বিভাগের বেঁধে দেওয়া এক বছর মেয়াদ ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। কিন্তু, মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। তাই, আসামি জামিন পেতে পারেন।
আপিল বিভাগের আদেশ সম্পর্কে ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান বলেন, আপিল বিভাগের আদেশের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, সে আদেশ আমাদের আদালতে আসেনি। আদালত আদেশ সম্পর্কে না জানলে কিভাবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন। মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে চার্জশিটে ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত মামলাটির বিচার নিষ্পত্তির।
উল্লেখ্য, এ মামলায় জয় গোপাল সরকার ছাড়াও গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূইয়াসহ মোট ১০ জন আসামি। অন্য আসামিরা হলেন—মিরাজুল হক ভুইয়া শিপলু, রাশিদুল হক ভুইয়া, শহিদুল হক ভুইয়া, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কেয়ারটেকার নবী হোসেন শিকদার, বলবয় সাইফুল ইসলাম ও তাদের সহযোগী পাভেল রহমান এবং তুহিন মুনসি। আসামিদের মধ্যে তুহিন জামিনে এবং শিপলু পলাতক। অপর আসামিরা কারাগারে।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপনের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব-৩। এ সময় এনুর বাসা থেকে নগদ ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ টাকা এবং ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের ২ কেজির বেশি ওজনের ১৯ প্রকার স্বর্ণালঙ্কার জব্দ হয়। রুপনের বসা থেকে নগদ ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা এবং ২ কেটি ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়। পরে এনু ও রুপনের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর, ওয়ারী এবং গেন্ডারিয়া থানায় মানিলন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাতটি মামলা দায়ের করা হয়।