শিক্ষা

জাবিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগের হামলা

তিন দফা দাবিতে অবস্থানরত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় আহত হয়েছেন আন্দোলনরত ঐ শিক্ষার্থীসহ আরও একাধিক শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর সাথে থাকা তিনজন নারী শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ২০ জনকে মারধর করা হয় বলে জানান তারা।

হামলার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাপস্বী রাবেয়া বলেন, ‘প্রত্যয়ের দাবির সাথে সহমত হয়ে আমরা সেখানে অবস্থান করি। এরপর যখন রাত দশটায় ইলেকট্রিসিটি চলে যায় তখন আমাদের ওপরে হামলা করে। আমরা যারা নারী শিক্ষার্থী আছি তাদেরকে গালিগালাজ করা হয়। অনশনকারী শিক্ষার্থীকে জোর করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। এরপর আবার সেই অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. কামাল বলেন, আমি মেডিক্যালে ডাক্তারের মাধ্যমে জানতে পারি মীর মশাররফ হলে শিক্ষার্থী অসুস্থ। এ সময় আমি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে অসুস্থ শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসার পথে হলের শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্যরত চিকিৎসক আনিছুর রহমান বলেন, মীর মশারফ হোসেন হলের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীকে মেডিক্যালে আনা হয়। তখন অনশনকারী শিক্ষার্থী আমাকে জানায় তাকে জোর করে তুলে মেডিক্যালে আনা হয়েছে এবং সে চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চাকর না, বডিগার্ডও না। ১৫ হাজার শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। দরকার হলে আমি পদত্যাগ করবো।’

এদিকে মারধরের পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে একটা মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যেয়ে অবস্থান নেয়।

সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। উপাচার্যের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

দাবিগুলো হলো-মীর মশাররফ হোসেন হলের সব অবৈধ ছাত্রদের রাতের মধ্যে হল ত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাদি হয়ে মামলা করতে হবে। প্রক্টর এবং প্রাধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিতে হবে গণরুম এবং গেস্টরুম সংস্কৃতি শেষ করতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা নাম দেন সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, এই ঘটনার সাথে ছাত্রলীগ জড়িত না। যদি কোনোভাবে কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।