খেলাধুলা

‘নাটকীয়’ শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর গল্প বললেন শরিফুল  

টিম হোটেলের লবির সামনে সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা তাক করা দেখে যেন ভড়কে গিয়েছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। মিনিট কয়েক অপেক্ষা করে স্ত্রীকে আগে পাঠিয়ে দেন, এরপর পেছনে না তাকিয়ে তিনি নেমে ঢুকে যান হোটেলে। মুখে লাজুক হাসি। মাঠের খিপ্র শরিফুল আর বাইরের শরিফুল যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। 

শ্বাসরুদ্ধকর মূহুর্তে করিম জানাতকে পারফেক্ট কাটে দারুণ চারে গতকাল বাংলাদেশের জয়ের তরী তীরে এসে ডোবা থেকে রক্ষা করেছিলেন শরিফুল। অথচ শরিফুল নামার আগে তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন করিম। কিন্তু নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা তাওহীদ হৃদয় ও নতুন ব্যাটসম্যান শরিফুল সেটি সামলেছেন সাহসিকতার সঙ্গে। 

হৃদয়ের কল্যাণে ইতিমধ্যে জানা গেছে তিনি শরিফুলকে কি পরামর্শ দিয়েছিলনে। শরিফুলের অনুভূতিও জানা গেলো অবশেষে। ‘যখন আমি মাঠে নামছি, হৃদয়ও বলছিল এটা কোনো বিষয় না, কোনো চাপ না। দুই বলে দুই রান হবে, না লাগলেও তুমি দৌড় দিবা। বিশ্বাস রাখো হবে। পরে আল্লাহর রহমতে হয়ে গেছে।’

শনিবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ভিডিও বার্তায় এভাবে বলেছেন ডানহাতি এই পেসার। এর আগে আজ সারাদিন তিনি পরিবার নিয়ে সিলেটের দর্শনীয় স্থানে ঘুরেছেন। দুপুরে খাবার খেয়ে আসেন হোটেলে। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২ উইকেটে দারুণ জয়ের পর আজ ঘোরাফেরা আর বিশ্রাম করে কাটিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। সাকিব নিজেও টিম হোটেল থেকে বের হন বিকেলে। 

১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন হয় ৬ বলে ৬ রান। মিরাজ প্রথম বলে চার মেরে ব্যবধান কমিয়ে আনেন। কিন্তু পরের তিন বলে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১ বল হাতে রেখে আসে ২ উইকেটের জয়। 

নাটকীয় সেই শেষ ওভার নিয়ে শরিফুলের ভাষ্য,  ‘১ ওভারে ৬ রান লাগে। মিরাজ ভাই যখন চার মারে তখন আমি প্রায় নিশ্চিত ছিলাম যে আমরা জিতে যাব, আমি মোস্তাফিজ ভাই, নাসুম ভাই রিল্যাক্স। একটা প্যাডও খুলে ফেলছিলাম। যখন মিরাজ ভাই আউট হলো তখন আবার প্যাড পরতে লাগলাম, তাসকিন ভাই আউট হওয়ার পর আস্তে আস্তে নিচে গেলাম। নাসুম ভাই নামল উনি আউট হয়ে গেল। আমি যাচ্ছিলাম, কোচ আমাকে বলল, তুমি পারবা। শুধু ব্যাটে বলে সংযোগ করবা সহজ হয়ে যাবে।’ 

বল ছিল ২টি, রানও লাগতো ২। নন-স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলে ৪৭ রান করে হৃদয়। তাই শরিফুলের এত চিন্তাও ছিল না, ‘হৃদয় থিতু ব্যাটার ছিল। তারপরও ওর সঙ্গে অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছিলাম আন্ডার-১৯ বিশ্বকাপসহ অনেকে ম্যাচ খেলছি। ওর ওপর একটা বিশ্বাস ছিল আমি যদি নাও লাগাতে পারি ও যদি স্ট্রাইক পাইতো শেষ করতো। ওর উপর বিশ্বাস ছিল আর কি।’