বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাস্তার তৈরির সরঞ্জাম রেখে মাঠ দখল করে রাখা হয়েছে। এমনকি বিদ্যালয় চলাকালে ওই মাঠেই আগুন জ্বালিয়ে বিটুমিন গলানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে কালো ধোঁয়া ও ছাইয়ের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষাথীদের।
এদিকে, স্কুলের এক মাস ধরে দখলে থাকায় স্থানীয় শিশু-কিশোররা মাঠটিতে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে স্কুলটিতে গিয়ে দেখা যায়, শাজাহানপুর উপজেলার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘আলমগীর এন্টারপ্রাইজ’ এর সড়ক নির্মাণের সমগ্রী পাথর ও ইটের কংক্রিট, বালু, মাটি, এক্সকাভেটর, বিটুমিনের ড্রাম রাখা হয়েছে মাঠের একপাশে। স্কুলের শহিদ মিনারের পাশে বিটুমিন গলানোর জন্য চুলা স্থাপন করে আগুন জ্বালিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে শ্রমিকদের। এর ফলে আগুনের কালো ধোঁয়া স্কুল ভবনে প্রবেশ করছিল, ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের। বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
স্থানীয়রা বলেন, এটি গ্রামের একমাত্র মাঠ। আমাদের সন্তানরা এখানে খেলাধুলা করে। মাঠের মধ্যে মালামাল রেখে দূর-দূরান্তের রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। তাই আমাদের সন্তানরা খেলাধুলা করতে পারছে না।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য সুমন বলেন, এক মাস ধরে বিদ্যালয়ের মাঠের এক অংশ দখল করে রাস্তার কাজের ইট, বালি, বিটুমিন, মেশিনসহ জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। স্কুল চলাকালীন তারা বিটুমিন জ্বাল দেন। অনেক কালো ধোঁয়া হয়। বাচ্চারা এখানে খেলাধুলা করতে পারে না। এখানে মালামাল রাখার যৌক্তিকতা নেই।
স্কুলের অভিভাবক কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম টুকু বলেন, আমি এখানে মালামাল রাখতে নিষেধ করেছি। গতকাল বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জানিয়েছেন দ্রুত তারা মালামাল মাঠ থেকে সরিয়ে নেবে।
শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ আলম এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
আলমগীর এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর বাদশা আলমগীর জানান, যথাযথ সরকারি নিয়ম মেনেই রাস্তার তৈরির সরঞ্জাম রেখে কাজ করছি।
শেরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান জানান, অনুমতি ছাড়া স্কুলের মাঠে রাস্তার তৈরির সরঞ্জাম রাখতে দেওয়ায় প্রধান শিক্ষককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঠিকাদার ও স্থানীয়রা বসে শিক্ষা অফিসার বরাবর ২দিনের সময় চেয়ে একটি আবেদন দিয়েছেন। যদি তারা দুই দিনের মধ্যে রাস্তার তৈরির সরঞ্জাম না নিয়ে যান তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা সুলতানা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে অতি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।