কলেজের মূল ফটকের সামনে বাগান বিলাস গাছ। সেই গাছের ডালগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে হাজারো চড়ুই পাখি। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু করে পরের দিন ভোর পর্যন্ত এসব পাখির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে কলেজ প্রাঙ্গন। এতে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীরা অভিখূত হন। এমনই চিত্র দেখা গেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বিকেলের নির্দিষ্ট সময় পাখিগুলো দল বেধে কলেজের সামনের বাগান বিলাস গাছে আশ্রয় নেয়। ভোরের নির্দিষ্ট সময়ে পাখিগুলো দলে দলে উড়ে যায় খাদ্যের সন্ধানে। স্থানীয় বা নাগরিকরাও যান্ত্রিকতার শব্দ দূষণ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে ছুটে আসেন পাখির কলরব শুনতে। তারা কলেজের সামনের সড়কে বা আশপাশে দাঁড়িয়ে প্রাণভরে অবলোকন করেন পাখিদের জীবনের গান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজের মূল গেটে লাগানো বাগান বিলাস গাছের শাখায় শাখায় ঝুলে আছে রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত ছড়ার সেই চড়ুই পাখিগুলো। বাগান বিলাস গাছে আসার আগে পাশের দুইটি গাছে ধীরে ধীরে জড়ো হতে থাকে পাখিগুলো। এরপর ঝাকে ঝাকে চলে আসে কলেজ গেটের গাছের ডালে।
স্থানীয় সংবাদকর্মী অভিজিৎ ঘোষ বলেন, দিন দিন শহরে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাখি তাদের বাসস্থান হারাচ্ছে। কলেজের গেটেই এই জায়গাটাকে পাখিগুলো নিরাপদ মনে করে। যে কারণে হাজারো পাখি এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
পাখি দেখতে আসা আব্দুল করিম ও সোহেল রানাসহ কয়েকজন জানান, বিকেলের সময় পাখির কলরব এটা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। একসঙ্গে এতো পাখির কিচির মিচির শব্দ কোথাও পাওয়া যায় না। প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং পাখিদের অভয়াশ্রম তৈরি করতে বেশি বেশি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এসএম জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন ভোরে পাখিগুলো যেন কোথায় চলে যায়। বিকেলে এরা ফিরে আসা। পাখিদের কিচির মিচির শব্দ মনকে ভরিয়ে তোলে। পাখিকে যাতে কেউ বিরক্ত না করে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ থাকি।
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, পাখিরা সময় মেনে চলে। সঠিক সময় যায় সঠিক সময়ে আসে। পাখির এমন মিলন মেলা দেখে কলেজের বিভিন্ন জায়গায় তাদের জন্য আবাসস্থল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।