হংকং-ভিত্তিক স্মার্টফোন কোম্পানি ইনফিনিক্স সম্প্রতি বাংলাদেশের বাজারে এনেছে নোট ৩০ সিরিজ। এই সিরিজের প্রিমিয়াম ফোন নোট ৩০ প্রো বর্তমানে দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
সাশ্রয়ী এবং মাঝারি মূল্যের এই ফোনটিতে রয়েছে বেশকিছু আকর্ষণীয় ফিচার। এসব ফিচারের মধ্যে আছে শক্তিশালী চার্জিং, ক্যামেরা সিস্টেম ও ওয়্যারলেস ফাস্ট চার্জিংসহ আরো অনেক কিছু। চলুন জেনে নেওয়া যাক নোট ৩০ প্রো এর প্রধান স্পেসিফিকেশন এবং এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো।
ইনফিনিক্স নোট ৩০ প্রো-র প্রধান ফিচারগুলো:
ডিজাইন: ইনফিনিক্স নোট ৩০ প্রো-তে আছে সূক্ষ্ণ বেজেলযুক্ত ৬.৬৭ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যা দেয় চমৎকার দেখার অভিজ্ঞতা। দৃষ্টিনন্দন, উজ্জ্বল টেক্সচারের সঙ্গে এর ব্যাক প্যানেলে আরো আছে ইনফিনিক্সের ছোট লোগো আর সুবিন্যস্ত ট্রিপল-লেন্স ক্যামেরা সেটআপ।
ডিসপ্লে: ডিভাইসটির ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেট এবং ইনফিনিক্সের স্মার্ট রিফ্রেশ ও মাগেলান ইঞ্জিন প্রযুক্তি চমৎকার ভিজ্যুয়াল ও কার্যকর ব্যাটারির ব্যবহার নিশ্চিত করে। এর ১০৮০x২৪০০ পিক্সেলের অ্যামোলেড ডিসপ্লের সঙ্গে আছে ৯০০ নিট-এর সর্বোচ্চ ব্রাইটনেস এবং ৩৬০ হার্জ টাচ স্যাম্পলিং রেট। এটি গেমিং এবং ভিডিও প্লেব্যাকের সময় প্রাণবন্ত রং ও দারুণ ডিটেইলের নিশ্চয়তা দেয়।
পারফরম্যান্স: ইনফিনিক্স নোট ৩০ প্রো ফোনে শক্তিশালী ৬ ন্যানোমিটার মিডিয়াটেক হেলিও জি৯৯ প্রসেসর ব্যবহৃত হয়েছে, যা ব্যাটারির কার্যকারিতা ও উন্নত পারফরম্যান্স প্রদান করে। ভেপার-চেম্বার লিকুইড কুলিং প্রযুক্তি থাকার ফলে গেমিংয়ের মতো কাজের সময়ও ফোন থাকে ঠান্ডা। তাছাড়া, ইনফিনিক্সের আল্ট্রা পাওয়ার সিগন্যাল (ইউপিএস) প্রযুক্তি একটি স্থিতিশীল ও নিরবচ্ছিন্ন কানেকশন নিশ্চিত করে। বিশেষত দুর্বল সিগন্যালসম্পন্ন এলাকায় এটি বেশি কার্যকর।
ব্যাটারি ও চার্জার: কার্যকর হেলিও জি৯৯ প্রসেসরের সঙ্গে ফোনটির ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি মিলে ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। এর ফলে সারাদিন ধরে খুব সহজেই মাঝারি থেকে ভারী কাজ করা যায় ফোনটিতে। ডিভাইসটি ৬৮ ওয়াট অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ সাপোর্ট করে, যার ফলে মাত্র ৩০ মিনিটেই ফোনটিতে ১ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ দেওয়া যায়। বাড়তি সুবিধার জন্য এতে আরো আছে ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং। বাইপাস চার্জিং ফিচারটি ভারী ব্যবহারের সময়ও নিরাপদ চার্জিং নিশ্চিত করে। অ্যাকসেসরিজ এবং অন্যান্য ওয়্যারড ও ওয়্যারলেস ডিভাইসে চার্জ দেওয়ার জন্য আছে এই ফোনের রিভার্স চার্জিং অপশন।
ক্যামেরা: নোট ৩০ প্রো’র ক্যামেরা সেটআপে আছে আকষর্ণীয় প্রাইমারি সেন্সর, একটি ২ মেগাপিক্সেল মাইক্রো ক্যামেরা এবং একটি ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ সেন্সর। দিনের আলোয় নিখুঁত ছবি তোলার ক্ষেত্রে প্রাইমারি শুটার চমৎকার কাজ করে। অটো এইচডিআর ও সুপার নাইট মোডের মতো ফিচার ক্যামেরার সক্ষমতা আরো বাড়িয়ে তোলে। ফোনটির ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে ভালো মানের সেলফি তোলা যায়।
সফটওয়্যার: এক্সওএস ১৩ দ্বারা চালিত এবং অ্যান্ড্রয়েড ১৩-এর ওপর ভিত্তি করে গঠিত সফটওয়্যারটিতে আছে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমাইজেশনের সুযোগ। এতে ব্যবহারকারীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ফোনটিকে ব্যবহার করতে পারেন। এর লঞ্চার ও দারুণ পারফরম্যান্স গ্রাহকদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতাকে উন্নত করে তোলে।
ইনফিনিক্স নোট ৩০ প্রো-র সুবিধা ও অসুবিধা:
ইনফিনিক্স নোট ৩০ প্রো-র বেশ কিছু সুবিধা আছে। যেমন: উজ্জ্বল টেক্সচারসম্পন্ন আকর্ষণীয় ডিজাইন, ভেপার-চেম্বার লিকুউড কুলিংসম্পন্ন শক্তিশালী মিডিয়াটেক হেলিও জি৯৯ প্রসেসর এবং আকর্ষণীয় ১২০ হার্জ অ্যামোলেড ডিসপ্লে। এতে আরো আছে দ্রুত ও ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্টের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, ১০৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সরসম্পন্ন বহুমুখী ক্যামেরা সেটআপ এবং অ্যান্ড্রয়েড ১৩-এর ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত কাস্টমাইজেবল সফটওয়্যার।
তবে এর কিছু অসুবিধাও আছে। যেমন: গড়পড়তা ফোনের চেয়ে এই ফোন কিছুটা ভারী, প্রি-ইনস্টলড অ্যাপগুলো থেকে আসা নোটিফিকেশন বেশ ঝামেলাপূর্ণ, বিশেষত অল্প আলোয় এর ক্যামেরা পারফরম্যান্সের উন্নতি প্রয়োজন, এতে আল্ট্রা-ওয়াইড ফিচার যুক্ত করা দরকার এবং এর স্পিকারের মান আরও উন্নত করার সুযোগ আছে।
মূল্য:
শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের ইনফিনিক্স নোট ৩০ প্রো এর দাম ২৭,৯৯৯ টাকা। ফোনটির সঙ্গে ২,০০০ টাকা দামের একটি ওয়্যারলেস চার্জার মিলবে বিনামূল্যে।
নোট ৩০ সিরিজের অন্তর্ভুক্ত নোট ৩০ প্রো এবং নোট ৩০ মডেলগুলো অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ প্রযুক্তিসম্পন্ন। নোট ৩০ ফোনে ৪৫ ওয়াট অল-রাউন্ড ফাস্ট চার্জ, ৬৪ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং ১৬ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা রয়েছে। এই ফোনটির ৮ জিবি+১২৮ জিবি ভার্সনের দাম পড়বে ১৮,৯৯৯ টাকা এবং ৮ জিবি+২৫৬ জিবি ভার্সনের দাম পড়বে ২৩,৯৯৯ টাকা। নোট ৩০ ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা নেই। তবে এই ফিচারটি ছাড়া ফোনের অন্যান্য সব ফিচার নোট ৩০ প্রো এর মতোই।