আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারের কবি এখন সশস্ত্র বিদ্রোহী নেতা

তিনি ছিলেন কবি। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে কবিতা লিখে জেলেও গিয়েছেন। এখন তিনি মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করা সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের এক জন। ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে মং সাংখা নামের ওই কবি এখন হয়ে গেছেন মিলিশিয়া নেতা। বামার অঞ্চলকে মিয়ানমারের কাছ থেকে পৃথক করার জন্য লড়াই করছেন এই মিলিশিয়া নেতা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মং সাংখা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিকে সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলের পর বামার পিপলস লিবারেশন আর্মি (বিপিএলএ) গঠন করা হয়। এই মিলিশিয়া বাহিনী  মিত্রদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছে এবং দেশের সীমান্তে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তাদের কৌশলগত মূল লক্ষ্য হচ্ছে, পৃথক বামার অঞ্চল গঠন।

বিপিএলএ-এর অধিকাংশ সদস্য বৌদ্ধ বামার। মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশই বামার জাতি গোষ্ঠীর। এরা মধ্য মিয়ানমারে আধিপত্য বিস্তার করে আছে।

থাইল্যান্ডের সীমান্তের কাছে তার জঙ্গল শিবির থেকে পাঠানো বার্তায় মং সাংখা বলেন, ‘বামার জনগণের মাধ্যমে গঠিত একটি সেনাবাহিনীর জন্য বামার অঞ্চলে থাকা এবং সেখানে সক্রিয় হওয়া আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

৩০ বছর বয়সী এই কমান্ডার জানান, পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)-এর সাথে কাজ করতে চায়  বিপিএলএ। পিডিএফ হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সাং সু চির প্রশাসনে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকারের সশস্ত্র শাখা। তারা জান্তার উৎখাতের জন্য লড়াই করছে। পিডিএফের অধিকাংশ সদস্যই বামার জনগোষ্ঠী থেকে আসা।

মিয়ানমারভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির ধারণা, বিপিএলএ’র প্রায় এক হাজার সদস্য রয়েছে। এটি দেশের সবচেয়ে বড় নতুন মিলিশিয়া বাহিনী হতে পারে।

বিপিএলএ-এর সদস্য বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে সংযোগের জন্য মং সাংখার ব্যক্তিগত দক্ষতাই কৃতিত্বের দাবিদার। জান্তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর রাস্তা থেকে এখনও দূরে থাকলেও কীভাবে নতুন মিলিশিয়ারা মিয়ানমারের রাজনৈতিক ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে বিপিএলএ তার জ্বলন্ত উদাহরণ।