বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সবচেয়ে সুন্দর সবুজ বৃক্ষবেস্টিত সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা ও বিনোদন কেন্দ্র সিআরবি। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত মানুষ শান্ত-শীতল পরিবেশে বেড়ানো, বিনোদন নিতে আসে এখানে। সিআরবি সিরিষ গাছের তলার মাঠে সকাল-বিকাল শিশু-কিশোররা ক্রিকেট, ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণাধীন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই সিআরবি সিরিষতলাকে এখন রীতিমত বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এই মাঠ বাণিজ্যিকভাবে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে মাসব্যাপী দেশীয় পণ্য ও জামদানি মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।
সরেজমিন সিআরবি সিরিতলা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠ ঘিরে সেখানে মেলার স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে অনেক স্টল পণ্য সাজিয়ে বিক্রিও শুরু করেছে। বাঁশ-টিনের ঘেরা-বেড়া দিয়ে তৈরি এসব স্টলে মাসব্যাপী বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা হবে বলে স্টলে কর্মরতরা জানান।
মেলার স্টল সাজানোর কাজে নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টল মালিক জানান, সিআরবি মাঠ রেলওয়ের কাছ থেকে এক মাসের জন্য মেলা আয়োজন করতে বাণিজ্যিকভাবে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। পুরো সেপ্টেম্বর মাস এখানে মেলা চলবে। এখানে প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি স্টল করা হচ্ছে। প্রতিটি স্টল মোটা অংকের অর্থে ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এখানে মাত্র ১৫ দিনের জন্য ছোট মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শিরীষতলায় নানা সময়ে নানা অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সিআরবিতে ঘুরতে আসা সামিউদ্দিন ও শিরিন নামের এক দম্পতি বলেন, ‘আমরা সবুজের ছায়ায় নিরিবিলিতে সময় কাটাতে এখানে আসি। শহরের সবচেয়ে সুন্দর ও এবং নয়নাভিরাম সিআরবি সিরিষতলাকেও বাণিজ্যিকিকরণ করায় আমাদের আর স্বস্থিতে সবুজ প্রকৃতি উপভোগ করারও উপায় থাকল না।’
ইমতিয়াজ উদ্দিন নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র জানান, সিআরবিকে চট্টগ্রামের ফুসফুস বলা হয়। যান্ত্রিক দূষিত শহরে বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে সিআরবিতে আসেন। এখন সেই সিআরবিতে মেলা আয়োজন করে এলাকাটি দূষিত করা হচ্ছে।
ইমতিয়াজ বলেন, শিরিষ তলায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল শিশু-কিশোররা ফুটবল, ক্রিকেটসহ নানা খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। কিন্তু খেলা বন্ধ করে বাণিজ্যিক মেলা আয়োজন নিন্দনীয়।