প্রশ্নের পিঠে পাল্টা প্রশ্ন। যেটা মুড অন থাকলে খুব বেশি করেন না সাকিব আল হাসান। তবে মুড অফে থাকলে এমন দিনটি দেখা যায়! এশিয়া কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অধিনায়ক সাকিবকে তেমন মুড অফেই পাওয়া গেছে। যেখানে অতি স্বাভাবিক, নিরীহ প্রশ্নগুলোর উত্তর ঠিকঠাক দেননি। বরং সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে বাউন্সার দিয়েছেন।
অমনটা কেন করেছেন সেটা কেবল নিজেই জানেন সাকিব। তবে প্রতিবেশী দেশের বিপক্ষে মাঠের লড়াইয়ে সাকিবকে অন্য রূপে দেখা গেছে। যেমন ব্যাটিংয়ে, তেমন বোলিংয়ে। সঙ্গে নেতা সাকিবকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রচলিত একটি কথা আছে, সাকিব উজার করে দিলে অনেকটা কাজ সহজ হয়ে যায়।’ আর প্রেমাদাসায় দিবারাত্রির ম্যাচে তেমন এক সাকিবকেই পাওয়া গেল। যেদিন শার্দুল ঠাকুরের বল আলতো টাইমিংয়ে সীমানায় আচড়ে ফেলে বুঝিয়ে গিয়েছিলেন,‘আজ আমার দিন।’
সাকিব অবশ্য সেই শার্দুলের বলেই বোল্ড হয়ে ফিরেছেন। কিন্তু মাঝের সময়টায় খেলে ফেলেন ৮০ রানের ঝকঝকে তকতকে ইনিংস। তার ওই রান আর তাওহীদ হৃদয় ও নাসুমের অবদানে বাংলাদেশ ২৬৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায়। যা শুভমান গিলের ১২১ রানের ইনিংসের পরও করতে পারেনি ভারত। ফাইনালের আগে ড্রেস রিহার্সের ম্যাচে তারা হেরে যায় ৬ রানের ব্যবধানে। আর এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ভারতকে হারাল ১১ বছর ব্যবধানে।
এমন একটা জয়ের অপেক্ষায় ছিলেন সাকিব। যে জয়টা দলকে তাঁতিয়ে দেবে বিশ্বকাপের আগে। মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তুলবে। ইস্পাত দৃঢ় মনোবল তৈরি করবে। সাকিব চাওয়া পাওয়া মিলে গেছে আর প্রেমাদাসার সবুজ গালিচায়। তাইতো বিশ্বকাপ খেলার আগে নিজের দল নিয়ে অনেক বড় বিবৃতি দিয়েছেন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে,‘আমাদের দলটা ভালো। একাধিক ক্রিকেটার ইনজুরিতে আছে। এছাড়া কিছু খেলোয়াড় বাইরে যাচ্ছে আবার ফিরছে। এটা আমাদের কাজে আসছে না। আমি মনে করি বিশ্বকাপে আমরা ভয়ংকর দল হবো।’
জয় পাওয়া ম্যাচটাতে সাকিব যেন নিজেকে নিংড়ে দিয়েছেন, বাকিরাও ছিলেন দৃঢ়চেতা। ভুল করলেও কেউ এক মুহর্তের জন্য হাল ছাড়েনি। ব্যাটিং আশানুরূপ না হলেও বোলিং হয়েছে দুর্দান্ত। সতীর্থদেরও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাকিব, ‘মাহেদী যখন বোলিংয়ে আসে তখন কাজটা সহজ ছিল না। বিশেষ করে বলটা পুরোনো হয়ে যাওয়াতে। কিন্তু ও আমাদের ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিল। টানা পাঁচ ওভার বোলিং করেছে যা সহজ ছিল না মোটেও। এছাড়া তানজিম শুরুতে ভালো বোলিং করে দুই উইকেট এনে দিয়েছিল।’
নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও সাকিব এই ম্যাচটাকে নিশ্চিতভাবেই নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে। যেখানে নিজের দলকে লেটার মার্কস দিয়েছেন। সামনে দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের তিন ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। সেখানে আরও কিছু জায়গায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে দল। এরপরই হবে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াড। যে বিশ্বাস নিয়ে সাকিব বলেছেন বিশ্বকাপে ভয়ংকর দল হবো, সেই পথে চলতে নিজেই বেছে নেবেন স্বপ্নসারথীদের।