বাংলাদেশের ক্রিকেটের চলমান পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। দেশের ক্রিকেটের দুই সুপারস্টার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান দুই মেরুতে। সাকিব নিজের বিশ্বকাপ দল গুছিয়ে ভারতের মিশনে রয়েছেন। যেখানে জায়গা হয়নি তামিমের। এ নিয়ে ঝড় যেন থামছেই না। তামিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ করে নিজের অবস্থান ব্যাখা করেছেন। সাকিব সাক্ষাৎকার দিয়ে জিরো টলারেন্স দেখানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এসব নিয়ে বেশ উত্তাল ক্রিকেটাঙ্গন।
উদ্বুদ্ধ ঘটনায় ছোট কিছু বার্তা দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাত আটটার পর ষোলো মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সাবেক অধিনায়ক ভিডিওতে তামিমের ভিডিও ও সাকিবের সাক্ষাৎকারের বিভিন্ন অংশ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন। নিজের অবস্থান জানান। সঙ্গে বিশ্বকাপের আগে এমন পরিস্থিতি কিভাবে সামলে আরো ভালো অবস্থানে থেকে ভারত যেতে পারত দল সেই পথও দেখিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক।
মাশরাফি বলেছেন, ‘তামিম ম্যানশন করেছে তার বক্তব্যে, ক্রিকেট বোর্ড থেকে যিনি কথা বলেছে, তিনি হয়তো বলেছে তুমি প্রথম ম্যাচে একাদশে থেকো না; থাকলেও নিচের দিকে ব্যাটিং করো। এখানে বেশ কিছু কথা বলার আছে। প্রথম হচ্ছে তামিম হয়তো কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেছে। কিন্তু তার ভিত্তিতে তাকে দলে না রাখা আসলে কেমন হলো একটা জিনিস। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তামিমকে এই বিষয়টা কিন্তু যে তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না বা খেললেও নিচে ব্যাটিং করো। আমার যদি ক্রিকেট জ্ঞান বিন্দুমাত্র থাকে, এই জিনিসটা ক্রিকেট বোর্ডের কেউ বলার বিষয় না। এটা বলবে একমাত্র কোচ বা অধিনায়ক বা নির্বাচকরা যিনি যাবেন দলের সঙ্গে। মূল কথা হচ্ছে টিম ম্যানেজম্যান্ট বলবে। তারা যদি বলে এটা বাংলাদেশ থেকেও বলতে পারতো। ভারতে গিয়েও বসে বলতে পারতো ম্যাচের একদিন আগে, দুইদিন আগে। যেটা আইডিয়াল সিচুয়েশন হয় উইকেট অ্যাসেস করার পর প্রতিপক্ষ তাদের বোলার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। কেন এটা এত আগে বলা হলো।’
অন্যদিকে সাকিবের কথার সূত্র ধরে মাশরাফি বলেছেন, ‘সাকিব আরও একটি কথা বলেছে, দলের স্বার্থে যে কাউকে যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করতে হতে পারে। আমিও একমত। যে কাউকে যেকোনো পজিশনে ব্যাটিং করতে দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় অধিনায়ক হিসেবে, সাকিব যেহেতু নেতৃত্ব নিয়েছেই। সাকিবই পারতো তামিমকে একটা মেসেজ দিতে বা এক মিনিট ফোনে কথা বলতে যে আমার এই পরিকল্পনা আছে, এটা আমি তোর সঙ্গে পরে আলোচনা করবো। পুরো জিনিসটা এখানে চাপা পড়ে যেতো।’
খেলোয়াড়, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং ড্রেসিংরুমে তৃতীয় ব্যাক্তির হস্তক্ষেপ চান না মাশরাফি।
‘সাকিব যেহেতু বলেছে, অফ দ্য ফিল্ড সবকিছু ঠিক করে তাকে অন ফিল্ডে অ্যাকশন নিতে হয়। সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সাকিব যেহেতু বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হয়ে গেছে, তাই প্রথম ম্যাচে তামিমের খেলা না খেলা নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছে সেগুলো সাকিব ব্যক্তিগতভাবে তামিমের সঙ্গে কথা বলার দরকার ছিল। তারা কথা বললে কিন্তু আজ এই আলোচনার জন্ম হতো না। সেটা যদি নেগেটিভও হতো তাও তাদের দুজনের ভেতরে থেকে শেষ হয়ে যেত। এতো আলোচনা হতো না।’ সাকিবের গ্রহণযোগ্যতা, গুরুত্বের কথা তুলে ধরে মাশরাফি বলেন, ‘সাকিব কোনো কিছু চাইবে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার বা সাবেক ক্রিকেটার কেউ তার কথা ফেলবে না। তাই সাকিব যদি তামিমের সঙ্গে কথা বলতো খুব ভালো হতো।’