প্রতি শুক্রবার মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে একটি মসজিদ। এখানে মানত করলে তা পূরণ হয় বলে জনশ্রুতিও রয়েছে। ফলে জুমা’র দিনে অনেকেই হাঁস-মুরগি ও ছাগল দান করেন এই মসজিদটিতে। দূর-দূরান্ত থেকে ৬০০ বছরের পুরাতন মোঘল আমলে নির্মিত ‘শাহী মসজিদ’ দেখতে প্রচুর মানুষের সমাগমও ঘটে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সুলতানপুরে অবস্থিত ৬০০ বছরের পুরাতন এই ‘শাহী মসজিদ’। মসজিদটি দেখতে ও নামাজ পড়তে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মোঘল আমলের অন্যতম এই নিদর্শনটি তার নিজস্ব রূপ হারিয়ে ফেলেছে। মসজিদটিতে আধুনিক রূপ দিতে গিয়ে ঢাকা পড়ে গেছে প্রাচীন নিদর্শনের মূল গম্বুজটি।
সুলতানপুর দরগাপাড়া শাহী মসজিদটি কাপাসিয়া উপজেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে টোক সুলতানপুর গ্রামে অবস্থিত।
শাহী মসজিদের গম্বুজ
জনশ্রুতি আছে, ইসলাম প্রচারের জন্য গাজীপুরে এসেছিলেন ৩৬০ জন আউলিয়া। যাদের মধ্যে ১৩১তম ছিলেন শাহ সুলতান। তার নামেই এই গ্রামের নাম হয় সুলতানপুর।
ঐতিহাসিক তথ্যমতে, মোঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে ঈশা খাঁ ও মানসিংহের মধ্যকার যুদ্ধের সময় নির্মাণ করা হয় এই শাহী মসজিদ। মসজিদের গায়ে অস্পষ্টভাবে খোদাই করে লেখা রয়েছে ১৩৪৬। এই মসজিদটি ১৯৮৭ সালে সম্প্রসারণ করা হয়। মসজিদটিতে একসঙ্গে পাঁচ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
এই মসজিদের সঙ্গে আছে সুলতানিয়া হাফিজিয়া এতিমখানা মাদরাসা। এই মাদরাসায় দেড়শ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে বিনামূল্যে। শুধু তাই নয়, মসজিদের পাশে একটি জায়গায় কবরস্থান তৈরি হয়েছে হতদরিদ্র মানুষের জন্য।
শাহী মসজিদের ভেতরের দৃশ্য
মসজিদটি দেখতে এবং নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা জানান, মোগল আমলের তৈরি মসজিদটি আমাদের দেশের অন্যতম একটি ঐতিহ্য। কিন্তু সেই ঐতিহ্য এখন আধুনিক স্থাপনার কারণে দেখা যায় না। মানুষ যে কারণে মূলত দূর দূরন্ত থেকে আসেন তার কিছুই দেখা যায় না৷ লোকমুখে প্রচলিত এই মসজিদে শুক্রবার জুমা’র দিনে অনেকেই হাঁস-মুরগি ও ছাগল দান করেন। তবে ভেতরে প্রবেশ করে মূল শাহী মসজিদের অংশটুকু দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
মসজিদের সভাপতি মাহমুদুল আলম বলেন, মসজিদটি অনেক ছোট ছিল। সেখানে নামাজ পড়তে পারতেন ৪০/৪৫ জন। বর্তমানে ৫-৬ হাজার মুসল্লির আগমন ঘটে। যার কারণে মসজিদটি সংস্কার করা হয়েছে। তবে আমরা মসজিদের মূল ভবনটি ঠিক রেখেছি। মূল ভবনের বিভিন্ন যায়গায় প্লাস্টার খুলে পড়ে যাচ্ছিল। সংস্কার না করলে ভেঙে যেতো।