একটি পরিসংখ্যান দিয়েই বোলিংয়ে বাংলাদেশের হতশ্রী চিত্রটা ফুটে উঠবে। ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান যতক্ষণ ব্যাটিং করেছেন অফস্টাম্পের বাইরে ১৬ চার হজম করেছে বাংলাদেশ। কোনো সাফল্য আসেনি। দুদিন আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অফস্টাম্পের বাইরে বাংলাদেশ হজম করেছে ৯ বাউন্ডারি। কিন্তু উইকেট নিয়েছে ৭টি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজয়ের কারণ ব্যাখ্যায় কি এইটুকু পরিসংখ্যান যথেষ্ট নয়?
আগের দিন আফগানিস্তানকে ১৫৬ রানে আটকে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ৬ উইকেটে। মঙ্গলবার একই মাঠে ইংল্যান্ড ৩৬৪ রান তুলেছে। বাংলাদেশ অলআউট ২২৭ রানে। এলোমেলো বোলিংয়ের কারণেই যে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে তা অস্বীকার করেননি হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, ‘অফস্টাম্পের বাইরে বল করার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। পরিকল্পনা ছিল স্টাম্প টু স্টাম্প বোলিং করা। কিন্তু আমরা কোনো পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারিনি। বিশেষ করে এই ম্যাচে। শেষ ম্যাচে আমরা ভালো শুরুর পর ফিরে এসেছিলাম স্পিনারদের দাপুটে পারফরম্যান্সে। কিন্তু এই ম্যাচে স্পিনাররা তেমন কিছু করতে পারেনি। কারণ, ইংল্যান্ড বেশ চতুর ব্যাটিং করেছে।’
দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ নতুন বলে ভুগেছে। পেসাররা পারেননি ব্রেক থ্রু এনে দিতে। আজ প্রথম ১১ ওভারে ছয় বোলার ব্যবহার করেও মেলেনি সাফল্য। সাকিব প্রথম ড্রিংকস ব্রেকের পর ফেরান জনি বেয়ারস্টোকে। তবুও রানের জোয়ার থামানো যায়নি। চার ছক্কার ফুলঝুরিতে মাঠ মাতিয়ে রাখেন মালান ও রুট। মালান বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে ১৪০ রানে থামলেও রুট করেন ৮২ রান। টস জিতে অনুকূল কন্ডিশনে সাফল্য না পাওয়ায় হাথুরুসিংহে হতাশ, ‘যেভাবে আমরা শুরু করেছি তাতে আমি হতাশ। আমরা আরও স্টাম্প টু স্টাম্প বোলিং করতে পারতাম। বিশেষ করে প্রথম ১০ ওভারে। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল রান চারশ হয়ে যেতে পারে। শরিফুল ভালোভাবে ফিরে এসেছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ বোলিং করেছে। এটাই যা ইতিবাচক দিক। কিন্তু আমরা ভালো করিনি।’
১৩৭ রানে হেরে যাওয়া এই ম্যাচ নিশ্চিতভাবে ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে ওপেনার লিটনের রানে ফেরাকেই কেবল ধর্মশালা থেকে নিয়ে যেতে চাইছেন হাথুরুসিংহে, ‘এই ম্যাচ থেকে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি লিটনের ফিরে আসা। যেভাবে সে ব্যাটিং করেছে আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। তার জন্যও সুখবর। আমরা জানি সে ম্যাচ উইনার। শুরুতে আমাদের রান প্রয়োজন। উইকেট হারাতে চাই না। লিটনের সঙ্গে মুশফিকের রান পাওয়া আমাদের জন্য ইতিবাচক।’
তবে ওপেনিংয়ে হাথুরুসিংহের দুশ্চিন্তা কাটছেই না। নতুন বলে প্রতিপক্ষ সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। বাড়তি ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে আসেওনি। লিটনের সঙ্গী হিসেবে তানজিদের ওপরই ভরসা রাখছেন তিনি, ‘তানজিদ রান পাচ্ছে না। তড়িঘরি আউট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই সে রান করেছে। মাত্রই সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছে। আপনি যদি দুই ইনিংস দিয়ে তাকে মূল্যায়ন করেন তাহলে কঠিন। মালান তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই খেলতে পারত না। এজন্য ধৈর্য্য ধরতে হবে।’
শুধু তানজিদকে নিয়েই নয়, গোটা দলের ওপরই বিশ্বাস রাখতে বললেন হাথুরুসিংহে। কেননা বিশ্বকাপে কেবলই দুটি ম্যাচ গেল। সামনে রয়েছে আরও সাত ম্যাচ। নিজেদের লক্ষ্য সেমিফাইনাল খেলার পথ এখনো খোলা লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের।