৫১ ঘণ্টা পর কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চাকরি ফিরে পেয়েছেন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভাটরা কাছারী কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবুল বাশার। সোমবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কুশ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। ইমাম ও জেলা আলেমদের উপস্থিততে সমঝোতা করা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল রোববার মাগরিবের নামাজ থেকে আবুল বাশার মসজিদে ইমামতি শুরু করেছেন। চাকরি ফিরে পাওয়ার পর প্রথম ওয়াক্তে (মাগরিব) তার পেছনে নামাজ আদায় করেছেন লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকান এলাহি অনুপম। ওই মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ পারভেজ হোসেন ও ইমামের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: নামাজের সময় ইউএনওকে সরে দাঁড়াতে বলায় চাকরি গেল ইমামের
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার কার্যালয়ে যান ইউএনওর তোপের মুখে পড়া ইমাম আবুল বাশার। এ সময় সেখানে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বডুয়া, লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকান এলাহি অনুপম, জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহ, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার গোলাপ হোসেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ক্বারি আবদুর রশিদ, সেক্রেটারি জহিরুল ইসলামসহ, কেন্দ্রীয় ও জেলার আলেমরা।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইমাম ও মুয়াজ্জিন ঘটনার পুরো বিবরণ দেন। ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য শুনে জেলা প্রশাসক ইউএনওকে ইমামের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে বলেন। এ সময় ইউএনও ‘সরি’ বলে ইমাম আবুল বাশারের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমামকে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে আশ্বস্ত করেন।
কুমিল্লা জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি হাফেজ মিজানুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইমামের ঘটনাটি সমাধান হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় গতকাল (রোববার) মাগরিব থেকে ইমামকে নামাজ পড়াতে বলেছেন এবং কেউ হুমকি-ধমকি দিলে জেলা প্রশাসককে অবহিত করতে বলেছেন। সমাধানের পর ইউএনও নিজের গাড়িতে করে ইমামকে নিয়ে ওই মসজিদে যান।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার খুতবা শেষে জুমার নামাজ শুরুর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) একটু সরে দাঁড়াতে বলেন ইমাম আবুল বাশার। এ ঘটনায় ওই ইমামকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ ওঠে।