চারিদিকে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ, ঔষধি গাছ, ফলের গাছ ছাদ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দেখে যেন মনে হয়, এক কৃষকের বাগান। টবে লাগানো সারি সারি এসব গাছ দেখতে যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি ছাদের বাতাসেও যেন এক অন্যরকম অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়। এ চিত্র দেখা মেলে নরসিংদীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ছাদে। প্রকৃতিকে ভালোবেসে গত ১ বছর ধরে ধীরে ধীরে এই বাগান গড়ে তুলেছেন এখানকার কয়েকজন কর্মকর্তা। অবাক করা ব্যাপার এখানে ১০০ প্রজাতির ১৫০টি গাছের চারা রয়েছে।
পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা সুমন মিয়া ও রাসেল নামে দুই সেবা গ্রহীতা বলেন, ‘নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এরকম ছাদ বাগান থাকবে, আমরা কল্পনাও করিনি। এক বাগানে বিভিন্ন জাতের গাছ রয়েছে। বিশেষ করে ফুলের ও ফলের গাছ আমাদের মুগ্ধ করে। এখানকার পরিবেশ অনেকটা গ্রামীণ পরিবেশের মতো। চারিপাশে গাছের আবরণ। একসঙ্গে অনেক ফলের গাছ এবং সেই ফল আমাদেরও খেতে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল থেকে মনমুগ্ধকর গন্ধ সবার মন ভালো করে দেয়।’
পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন জাতের ও বারো মাসী ফলের গাছ আমরা এখানে লাগিয়েছি। প্রথম দিকে মাল্টা, কমলা ও আমের চারা দিয়ে বাগান শুরু করি। বছর শেষে বাগান থেকে মিষ্টি ও সুস্বাদু মাল্টা এবং আম পাওয়া যায়। পর্যায়ক্রমে তিনি কামরাঙা, ডালিম, সফেদা, লেবু, জলপাই, পেয়ারা, বরই, আমড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল, ফুল ও সবজির গাছ লাগানো হয়।’
পরবর্তীতে সেখানে ড্রাগন, নিমগাছ, বনজুঁই, তুলসী, চিরতা, থানকুনি, পাথরকুচি, কালো কেশী, বাসক, অর্জুন, জবা, বেলিসহ বিভিন্ন জাতের ঔষধি গাছও রয়েছে। বর্তমানে এ বাগানে ১০০ প্রজাতির ১৫০ গাছের চারা রয়েছে।
নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক জামাল হোসেন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ধারণা সরকারি অফিস মানে শুধু একটি বিল্ডিং। কিন্তু না এর বাইরেও যে কিছু থাকতে পারে; সেটাই দেখানোর চেষ্টা করছি মনোমুগ্ধকর ছাদ বাগানের মাধ্যমে। আমাদের বাগানে বিভিন্ন রকমের ওষুধি, ফল, ফুলসহ দেশি-বিদেশি গাছ রয়েছে। এই গাছ যেমন দেখতে সুন্দর। ঠিক তেমনি এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য রক্ষা পাচ্ছে। আমরা সবাই অফিসের টাইমের ফাঁকে বাগান পরিচর্যা করি। এই ছাদ বাগান দেখতে বিভিন্ন মানুষ আসেন।’ এ ছাদ পরিদর্শনে আগতদের সাধারণ মানুষ, স্কুল, কলেজ ও বাসার ছাদে এমন বাগান গড়ে তোলার অনুরোধ জানান এ কর্মকর্তা।