খেলাধুলা

দারুণ শুরুর পরও অজি রান পাহাড় টপকাতে পারলো না পাকিস্তান

অথচ আবদুল্লাহ শফিক-ইমাম উল হক কী দারুণ শুরুই না এনে দিয়েছিলেন। তখন অস্ট্রেলিয়ার রান পাহাড়কে মামুলি মনে হয়েছিল। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানোর আভাস দিলেও অনুমিতভাবেই বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছে অস্ট্রেলিয়া।

ব্যাঙ্গালুরুর এম. চিম্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ডেবিড ওয়ার্নার-মিচেল মার্শের সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রান করে অস্ট্রেলিয়া। তাড়া করতে নেমে অ্যাডাম জাম্পার ঘূর্ণিতে ৩০৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। ৬২ রানের হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাবর আজমের দল। প্রথম দুটিতে জয়ের পর টানা দুটি হারলো তারা। অন্যদিকে চতুর্থ ম্যাচে অজিদের এটি টানা দ্বিতীয় জয়।

রান তাড়ায় নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। দুই ওপেনারের ফিফটিতে জুটি থেকে আসে ১৩৪ রান। ইমাম-শফিকের এই জুটি পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ইতিহাসে ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি।

এমন শুরুর পরও শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই হারতে হলো। শফিক ৬৪ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। অন্যদিকে ইমাম খেলে যাচ্ছিলেন সাহসী ক্রিকেট। কিন্তু ব্যক্তিগত ৭০ রানে তিনিও কাটা পড়েন। দুজন ফেরার পর পাকিস্তানের স্বপ্ন ছিল বাবর-মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ঘিরে। কিন্তু বাবর বরাবরের মতো বড় ম্যাচে ব্যর্থতার গানই গেয়ে যান। ১৮ রানে ফেরেন সাজঘরে।

এক প্রান্তে দারুণ খেলতে থাকা রিজওয়ানের সঙ্গী হন সাউদ শাকিল। দুজনে খেলছিলেন মারকুটে খেলা। ৪৮ বলে যোগ করেন ৫৭ রান। ৩০ বলে শাকিল আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর ইফতেখার এসে ৩ ছয় মেরে ঝড়ের ইঙ্গিত দিলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ২০ বলে ২৬ রান করে ফেরেন অ্যাডাম জাম্পার শিকার হয়ে। তার আউটের রেশ না কাটতেই রিজওয়ান ফেরেন জাম্পার ঘূর্ণিতে। ৪০ বলে ৪৬ রান করেন রিজওয়ান। তার ফেরার পর পাকিস্তান ৩১ রান তুলতে বাকি উইকেট হারায়।

অজিদের হয়ে দারুণ বোলিং করেন জাম্পা। ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন মার্কাস স্টয়েনিস-প্যাট কামিন্স।

এর আগে ওয়ার্নার-মার্শের সেঞ্চুরিতে ভর করে রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো দেড়’শ-এর বেশি রানের ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার। ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি দেড়’শ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ড আছে রোহিত শর্মার দখলে। দ্বিতীয় স্থানে আছেন ওয়ার্নার।

আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে এই বাঁহাতি ওপেনার সেঞ্চুরির দেখা পান মাত্র ৮৫ বলে। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১২৪ বলে খেলেন ১৬৩ রানের ইনিংস। ১০ রানে জীবন পাওয়া ওয়ার্নার ১৪টি চার ও ৯টি ছক্কায় সাজিয়েছেন ইনিংসটি।

অন্যদিকে মার্শ দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে জন্মদিনে সেঞ্চুরি দেখা পান মাত্র ১০০ বলে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষেই জন্মদিনে সেঞ্চুরি করেন নিউ জিল্যান্ডের রস টেলর। পাল্লকেলেতে ২০১১ সালে এই শতক হাঁকিয়েছিলেন টেলর। শেষ পর্যন্ত মার্শ ১০৮ বলে ১২১ রানে সাজঘরে ফেরেন।

দুজনের ওপেনিং জুটি থেকে আসে ২৫৯ রান। মার্শ আউট হলে ক্রিজে আসেন আইপিএলের কারণে এই মাঠের পরিচিত ক্রিকেটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন সাজঘরে। এরপর ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। ততক্ষণে বড্ড দেরি। মাঝে সর্বোচ্চ ২১ রান করেন মার্কাস স্টয়েনিস। আর কেউ বিশের ঘর পেরুতে পারেননি।

পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ১০ ওভারে মাত্র ৫৪ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট। ওয়ানডেতে তৃতীয় ফাইফার আর বিশ্বকাপে দ্বিতীয়। আফ্রিদির দিনে বাজে রেকর্ডে নাম লেখান হারিস রউফ। ৮৩ রান দিয়ে মাত্র ১ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ রান দেয়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান নেন তিনি। ৮৪ রান দিয়ে সবার ওপরে আছেন হাসান আলী। এ ছাড়া ওসামা মীর দেন ৮২ রান!