গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিচালা এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত কারখানার শ্রমিকরা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে সরে গেছেন। সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান।
এর আগে, সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। এসময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। পুলিশ পরে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এসময় শ্রমিকরা ভাঙচুর করেন কিছু যানবাহনও।
আরও পড়ুন: বেতন বাড়ানোর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
কারখানা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, উপজেলার তেলিরচালা এলাকার লগোজ অ্যাপারেলস, হাইড্রোঅক্সাইড সোয়েটার কারখানা, এপিএস অ্যাপারেলস, বে ফুটওয়ার ও পূর্বানী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা সর্বনিম্ন বেসিক বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে আজ সকাল ৯টায় বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময়ে আশপাশের কারখানার শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয় দিকে ১৫ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়েন ওই পথে যাতায়াতকারীরা।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। শিল্প পুলিশ প্রথমে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে। ফলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুর আড়াইটার দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: ৫ ঘণ্টা ধরে মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ
শ্রমিকরা বলেন, আমাদের হেলপারের বেতন ৮ হাজার ২০০ টাকা এবং সুপারভাইজারের বেতন ১১ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের পর আমাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। দ্রব্যমূল্যের যে দাম তাতে আমাদের জীবন চলছে না। এক কেজি মুলার দাম ৮০ টাকা, ১ কেজি সিমের দাম ১২০ টাকা। গ্যাসের দাম বেড়েছে, বাসা ভাড়া বেড়েছে। আমাদের বেতন ২৩ হাজার করতে হবে। এটাই আমাদের দাবি। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন করে যাব।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ বলেন, বেতন বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে আবরোধ সৃষ্টি করেন। লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।