খেলাধুলা

ঐক্যের ডাক নেতা সাকিবের কণ্ঠে

প্রশ্নকর্তা শেষ করার আগেই সাকিব এক গাল হাসি দিয়ে বললেন, ‘দোয়া করেন যেন কালকে টসটা জিতি…।’ সাকিবের ওমন উত্তরে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে হাসির রোল উঠে। কিন্তু পরমুহূর্তেই বাংলাদেশের অধিনায়ককে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে মূল্যায়ন করতে হয় তখন কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা এবারের বিশ্বকাপে একেবারে ভিন্ন রূপে। চার ম্যাচে তিনটি জিতেছে। হেরেছে নেদাররল্যান্ডসের বিপক্ষে। জয় পাওয়া প্রতি ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে রান উৎসব করেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৪২৮। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ৩১১ ও সবশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ৩৯৯। হেরে যাওয়া ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পরে ব্যাটিং করে ২০৭ রানে গুটিয়ে যায়। রান তোলায় যতটা আগ্রাসন দেখাচ্ছে প্রোটিয়ারা, রান তাড়ায় ভিন্ন চিত্র। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই আগে ব্যাটিং করে ম্যাচ জিতেছে বড় রান করে। আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলে তারা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটা ভালো করে জানা সবার।

সাকিবকে এমন তথ্য জানানো হলে, টস জয়ের জন্য দোয়া চাইতে বললেন সবাইকে, ‘দোয়া করেন যেন কালকে টসটা জিতি (হাসি)।’

দক্ষিণ আফ্রিকাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে নিজেরা রানের পাহাড়ে চাপা পড়ুক এমনটা চান না সাকিব। ওয়াংখেড়ের রান প্রসবা উইকেট ও ছোট সীমানার মাঠে ভালো ফল পেতে বোলারদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক।

‘এমন একটা জায়গায় খেলা হচ্ছে যেখানে বোলাররা ভালো না করলে জেতার সম্ভাবনা খুব কম। বোলাররাই জেতাতে পারে ম্যাচ অনেক সময়। শেষ ম্যাচে অনেক রান হয়েছে আগে, পরে বোলাররা ভালো করেছে। স্পিনাররা প্রভাব ফেলতে পারত যদি এই মাঠটা না হত। এই মাঠের কারণেই হয়ত স্পিনাররা অত বেশি প্রভাব নাও ফেলতে পারে।’

যদিও এখন অব্দি বিশ্বকাপে দলের ঐক্যবদ্ধ পারফরম্যান্স চোখে পড়েনি। ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগে সমানতালে জ্বলে উঠেনি বাংলাদেশ। পায়নি ছন্দ। জমে উঠেনি রসায়ন। তাতে উঠা-নামা ছিল দলের সাফল্য-ব্যর্থতায়। সাকিব অবশ্য আশা হারাচ্ছেন না। সামনে সুদিন আসবে বিশ্বাস তার, ‘বোলাররা আগে অনেক ভালো করে আসছে। ছন্দে আছে কি নেই তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কালকের ম্যাচে কতটা ভালো করতে পারবে গুরুত্বপূর্ণ। কালকের ম্যাচে যদি সবাই মিলে বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং ভালো করতে পারি তাহলে ভালো কিছু সম্ভব। সেটা আমাদের সামর্থ্য আছে আমরা বিশ্বাস রাখি অন্তত ওয়ানডেতে ভালো খেলি তাহলে যেকোনো দলের সাথেই জেতার সামর্থ্য রাখি।’ 

বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচ খেলার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। চার ম্যাচে দলগত সাফল্য একটি। ব্যর্থতা তিনটি। বলার মতো ব্যক্তিগত কয়েকটি পারফরম্যান্স রয়েছে। এছাড়া সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাই বেশি ভারী। দলের অবস্থান বিচারের জন্য চার ম্যাচ যথেষ্ট মনে হচ্ছে না সাকিবের। বিশ্বকাপ শেষেই নিজের দলকে মূল্যায়ন করার তাগিদ, ‘আসলে নয় ম্যাচের পরিকল্পনা করে এসেছি, বেশি হলে ১১ ম্যাচ খেলব। চার ম্যাচের পরিকল্পনা করে কেউ আসেনি। সবাই সব ম্যাচ ভালো করবে না তাও আমরা জানি। বাকি পাঁচ ম্যাচও যদি কেউ ভালো করে তাহলেও ভালো পারফরম্যান্স হয়। এখনই খুব বেশি মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আশা করি আমরা দলগত পারফরম্যান্সে আরও ভালো করব যেখানে আমাদের ভালো করা উচিত ছিল বলে মনে করি। আরও পাঁচ ম্যাচ বাকি আছে। টুর্নামেন্ট শেষ হলেই আমার মতামত দেওয়াটা ভালো।’