খেলাধুলা

৭৭১ রানের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার শ্বাসরুদ্ধকর জয়

রাচিন রবীন্দ্রের গড়ে দেওয়া ভিতে দাঁড়িয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জিমি নিশাম ম্যাচটা সহজ করে আনেন। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯, নিউ জিল্যান্ড থামে ১৩ রান নিয়ে। ডাবলস নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে ফেরেন নিশাম। এখানেই বদলে যায় ভাগ্য। 

৭৭১ রানের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৫ রানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। টস হেরে শনিবার (২৮ অক্টোবর) ধর্মশালায় ব্যাটিং করতে নেমে ৩৮৮ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ৩৮৩ রান করে নিউ জিল্যান্ড।

রান তাড়ায় নেমে ডেভন কনওয়ে-উইল ইয়ংয়ের জুটিতে দারুণ শুরু করে কিউইরা। তবে পর পর দুই ওপেনার ফেরায় কিছুটা চাপে পড়ে তারা। কনওয়ে ১৭ বলে ২৮ ও ইয়ং ৩৭ বলে ৩২ রান করেন। দুজন ফিরলে খেলার হাল ধরেন রাচিন রবীন্দ্র-ড্যারিল মিচেল। 

দুজনে ম্যাচের নাটাই নিজেদের হাতে নিয়ে খেলতে থাকেন। মিচেল ৫১ রানে আউট হলে ভাঙে ৯৬ রানের জুটি। অন্য প্রান্তে রাচিন খেলতে থাকেন দুর্দান্ত। নতুন ব্যাটার টম লাথাম-গ্লেন ফিলিপ্স দ্রুত ফিরলে চাপে পড়ে যায় কিউইরা। তবে সেঞ্চুরি তুলে নেন রাচিন, মাত্র ৭৭ বলে দেখা পান দ্বিতীয় শতকের।

শেষ পর্যন্ত রাচিন থামেন ৮৯ বলে ১১৬ রানে। ৯টি চার ও ৫টি ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজানো ছিল। রাচিন ফেরার পর খেলার হাল ধরেন নিশাম। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ব্যবধান কমাতে থাকেন। সঙ্গী মিচেল স্যান্টনার (১৭) ও ম্যাট হ্যানরি (৮) ফিরলেও তিনি বোল্টকে নিয়ে এগোতে থাকেন। মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি করেন নিশাম। কিন্তু পারেননি ম্যাচ শেষ করতে, শেষ ওভারে ডাবল নিতে গিয়ে ৫৮ রানে ফেরেন রানআউট হয়ে।

অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা। ২টি করে উইকেট নেন জস হ্যাজলেউড ও প্যাট কামিন্স। বল হাতে স্টার্কের খুব বাজে দিন গেছে। ১০ ওভারে ৮৯ রান খরচ করেন তিনি।

এর আগে ট্রাভিস হেড-ডেবিড ওয়ার্নারের রেকর্ড ওপেনিং জুটিতে রেকর্ড রান করে অস্ট্রেলিয়া। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলা হেড থামেন ১০৯ রানে। সেঞ্চুরি তোলেন মাত্র ৫৯ বলে! অজিদের হয়ে বিশ্বকাপে এটি চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি। চলতি বিশ্বকাপেই মাত্র ৪০ বল শতক হাঁকিয়ে রেকর্ড গড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। হেডের ৬৭ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০টি চার ও ৭টি ছয়ের মারে। তার হাতে ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কারও।

ওয়ার্নারের আউটে ১৭৫ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। সর্বোচ্চ ১৮৯ রান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট-মার্ক ওয়াহর। আর বিশ্বকাপে যে কোনো দলের বিপক্ষে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।  ওয়ার্নার ৬৫ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮১ রান করেন।

দুজন সাজঘরে ফিরলে রানের চাকা ধীর হয়ে যায় কিছুটা। সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে হারাতে থাকে উইকেট। মিচেল মার্শ ৫১ বলে ৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। স্টিভেন স্মিথ-মার্নাস লাবুশানে ১৮ রানের বেশি করতে পারেননি। 

এই তিন ব্যাটার ফেরার পর অবশ্য রানের গতি বেড়ে যায়। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মাত্র ২৪ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন। ২৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস আসে জস ইংলিসের ব্যাট থেকে। আর অধিনায়ক প্যাট কামিন্স যেন আরও এক কাঠি সরেস। মাত্র ১৪ বলে খেলেন ৩৭ রানের ইনিংস। 

কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট ও গ্লেন ফিলিপ্স। বোল্ট ৭৭ রান দিলেও ফিলিপ্স দেন মাত্র ৩৭ রান! সবচেয়ে বেশি ৮০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন স্যান্টনার।