টপ অর্ডার টপলেস! এর চেয়ে ভালো ব্যাখ্যা আর হতে পারে না নিশ্চয়ই। বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যা ব্যাটিং করেছেন তাতে এ কথা বলাই যায়। শুধু তারাই নয়, নতুন বলে শুরুতে যে ব্যাটিং করেছেন তারা, তাতে তাদের নিবেদন, সামর্থ্য নিয়ে অবলীলায় প্রশ্ন তোলা যায়।
বিশ্বকাপের ৩১তম ম্যাচে ইডেনে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে আবার শুরুতে বিপর্যয়। শুরুর ১০ ওভারেই ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। ৩৭ রান তুলতেই হারিয়েছে ৩ উইকেট। প্রথম ওভারে তানজিদ হাসান তামিমকে এলবিডব্লিউ করানোর পর নিজের দ্বিতীয় ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদি নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট পান।
এরপর হারিস রউফ নিজের প্রথম ওভারে ১৩ রান দিয়েও তুলে নেন মুশফিকুর রহিমের উইকেট। সেখান থেকে লিটন ও মাহমুদউল্লাহ দলের হাল ধরেন। শুরুর ১০ ওভারে আর কোনো বিপর্যয় হয়নি।
পরিসংখ্যান বলছে, এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত পাওয়ার প্লে’তে সবচেয়ে বাজে সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। সাত ম্যাচে পাওয়ার প্লে’তে ১৬ উইকেট হারিয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ৩ উইকেট কম হারিয়ে এই তালিকায় পরের স্থানে ইংল্যান্ড। এরপর ১১ উইকেট হারিয়ে তিনে আছে নেদারল্যান্ডস। দুই অঙ্কের ঘরে নেই আর কোনো দল।
বিশ্বকাপে নয়বার দলগুলো তিনটি বা তার বেশি উইকেট প্রথম দশ ওভারে হারিয়েছে। তিনবার করে বাংলাদেশই আছে শীর্ষে। এছাড়া ইংল্যান্ড দুইবার। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও নেদারল্যান্ডস আছে একবার করে। লম্বা সময় ধরেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের বার্তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এজন্য শুরুতে বৃত্তের সুবিধা কাজে লাগানোর কথা বলে আসছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বিশ্বকাপে রান তোলাতেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে’ তে ৭ ইনিংসে বাংলাদেশ তুলেছে কেবল ৩২১ রান। রান রেট ৪.৫৮। যা দ্বিতীয় ধীরতম। বাংলাদেশের চেয়ে কেবল পিছিয়ে আছে নেদারল্যান্ডস। যারা ২৫৭ রান করেছে ৪.২৮ রান রেটে।
এছাড়া বাকি আটটি দলই পাওয়ার প্লে’তে রান তুলেছে ৫ এর উপরে। যেখানে ভারতের রান রেট ৬.০১। অস্ট্রেলিয়ার ৭.০৫। স্ট্রাইকরেটেও নেদারল্যান্ডসের পর বাংলাদেশের অবস্থান। ডাচদের স্ট্রাইক রেট ৬৫.৮৩। বাংলাদেশের ৭১.৭৩। ডট বল খেলাতেও বাংলাদেশ সবার উপরে। ২৯৩ ডট বল খেলেছে পাওয়ার প্লে’তে। দুইয়ে থাকা নেদারল্যান্ডস খেলেছে ২৬০ বল।
বিশ্বকাপে এবার ভরাডুবির পেছনে বড় কারণ ব্যাটসম্যানদের অফফর্ম। টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা শুরুতেই লড়াইয়ে পিছিয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে সেই বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি দল। ভারতের বিপক্ষে তানজিদ ও লিটনের ৯৩ রানে জুটিই কেবল আশা দেখিয়েছিল। বাকি সময়টা কেবল আসা-যাওয়ার মিছিল। যার কারণে পাওয়ার প্লে’তে ধাঁধায় আছে স্বাগতিকরা।