গাজীপুরে বেতন বাড়ানোর আন্দোলন চলাকালে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক রাসেল হালাদারের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠিতে এখন মাতম চলছে। কোনো শান্তনাতেই থামছে না সন্তানহারা মায়ের কান্না। গতকাল সোমবার রাতে ছেলের মৃত্যুর খবর জানার পর থেকে মা রাশেদা বেগম কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ছেলে আর নেই। বারবারই মুর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা হান্নান হাওলাদার।
ঝালকাঠি সদরের বিনয়কাঠি ইউনিয়নের খাগুটিয়া গ্রামের রাসেল হাওলাদার গাজীপুরের পোশাক কারখানা ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেডের ইলেকট্রিশিয়ান পদে চাকরি করতেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত যুবকের মৃত্যু
এদিকে, ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে ঝালকাঠির গ্রামের বাড়িতে রাসেলের মরদেহ পৌঁছাতে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
আজ দুপুরে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, রাসেলের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে আত্মীয়-স্বজনরা আসতে শুরু করেছেন। বাবা-মায়ের সন্তান হারানো কান্না দেখে স্বজনরাও চোখে পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না।
রাসেলের বাবা হান্নান হাওলাদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ঢাকা থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হয় আপনার ছেলে মারা গেছে। খবর শুনে আমি যেন মাটির ভেতরে ঢুকে পড়েছি। আমার উপার্যনক্ষম ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে নির্বাক হয়ে যাই। আমার ছেলে রাজনীতি বা দল করেনি। আমি গরিব মানুষ। আমার ছেলে মেয়ে আমার বন্ধুর মতো। এলাকার শতভাগ মানুষ রাসেলকে ভালো বলবে। আমি লোক মারফত জানতে পারি, আন্দোলনের সময় প্রথম গুলি লাগে রাসেলের হাতে। পরে বুকে গুলি লাগলে সে মারা যায়।
রাসেলের ভগ্নিপতি মো. শাহিন বলেন, আমরা রাসেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে আত্মীয়-স্বজনদের পাঠিয়েছি। লাশ নিয়ে আসতে রাত হবে। গ্রামের বাড়িতে অনেক মানুষ আসছে। অনেকেই রাসেলের স্বজনদের শান্তনা দিচ্ছেন। এমন মৃত্যু আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।